Hayatunnabi




হায়াতুন্নাবী





রাসুল সাঃ এর নামে প্রচলিত
যে কোন হাদিস বা সুন্নাহ
বাতিল বলে গণ্য হবে
যদি তা কুরআন মাজিদের সাথে সাংঘর্ষিক হয়





সরলিকরনঃ
হায়াতুদ্দুনিয়া  = দুনিয়ার জীবন
হায়াত আল আখিরা = পরকালের জীবন
হায়াতন্নাবী = নবীর জীবন ।



উপস্থাপনায়ঃ
প্রকৌশলী মুহাম্মাদ শাহা আলাম, এমবিএ
১১৪, পশ্চিম নাখালপাড়া, তেজগাঁও, ঢাকা
০১৯৭৯১১৯০৮২


ভূমিকাঃ
কিছু মানুষের আকিদা এমন যে, রাসুল সাঃ হায়াতুন্নবী অর্থাৎ তিনি জিন্দা বা জীবিত নাবী, মাটির কবরে জীবিত আছেন, শরীর আমদের মতই অটুট আছে, অর্থাৎ তাঁর শরীর /দেহ মাটিতে মিশে নাই,  সলাত আদায় করছেন, আশেকের আবেদন বা ডাক শুনতে পারেন, অন্যকে স্বপ্নে নির্দেশনা দেন, আশেকের দিকে হাত বের করে দেন ইত্যাদি। এই বিষয়টি শুনার পর থেকেই আমার কেমন কেমন অস্থির এবং মনটা খুবই খারাপ যাচ্ছিল । কারন বিষয়টি আমার জানা জ্ঞ্যানে আল কুরানের সাথে মিলে না ।

আল্লাহ্‌ বলেন ৩:১৮৭> স্মরণ কর, আর আল্লাহ যখন আহলে কিতাবদের নিকট থেকে ওয়াদা গ্রহণ করলেন যে, তোমরা তা       (আল্লাহ্‌র বানীকে) মানুষের নিকট স্পষ্ট ভাবে বর্ণনা করবে এবং তা গোপন করবে না, তখন তারা সে প্রতিজ্ঞাকে নিজেদের পেছনে ফেলে রাখল আর তারা কেনা-বেচা করল সামান্য মূল্যের বিনিময়েসুতরাং কতই না মন্দ তাদের এ বেচা-কেনা

তাহলে এখন কি আমদের উলামাগন কুরআন কে স্পষ্ট করে বর্ণনা করছেন না? তাঁরা কি কিছু বলছে্ন আর কিছু গোপন করছেন? তাঁরা কি চাকুরীর দু’পয়সার জন্য আখিরাতকে সামান্য মূল্যে বিক্রয় করছেন ? তাহলে আমরা কি আহলে কিতাবদের মত হয়ে গেলাম?না কি জ্ঞ্যানের অভাব? যেমনঃ একটি আয়াত উল্লেখ করেই মানুষদের মাঝে নিজের ব্যক্তিগত বিশ্বাসের / ধরনার উপর বক্তৃতা বা বয়ান করছে নিজেদের মনগড়া বিশ্বাস এর উপর ভিত্তি করে। মুলতঃ কুরআনে উল্লেখিত বিতর্কিত বিষয়গুলোর সব সমাধান দেয়া আছে, অথচ আমরা কুরআন থেকে বিমুখ ।  
============================================
নোটঃ- ৩:১৮৭ ( ৩ দ্বারা বুঝানো হয়েছে সুরার ক্রমিক নং এবং ১৮৭ দ্বারা সুরাটির আয়াত নং বুঝানো হয়েছে)

এই লেখাটি মুলতঃ কুরআন মাজিদের বিভিন্ন আয়াতের একটি সাজানো সংকলন। যারা আল্লাহকে স্মরণ করেন তাদের জন্য ।

১৮:১০২>কাফেররা কি মনে করে যে, তারা আমার পরিবর্তে আমার বান্দাদেরকে আউলিয়া রূপে গ্রহণ করবে? আমি কাফেরদের অভ্যর্থনার জন্যে জাহান্নামকে প্রস্তুত করে রেখেছি।

আল্লাহ্‌ই আমাদের একমাত্র আউলিয়া, একমাত্র অভিবাবক। কিন্তু আমরা বলছি অমুক আউলিয়া, অমুক আওলিয়ার কবর বা মাজার, অমুক আয়লিয়ার মাজারে গেলে সন্তান হয়, সমস্যার সমাধান হয় ইত্যাদি। কিন্তু এগুলোর মালিক তো আল্লাহ্‌ । তাহলে, আমরা কি কুরআন কে মানুষের নিকট স্পষ্ট ভাবে বর্ণনা করছি ?

শুধু তাই নয়, আমরা রাসুল সাঃ এর নামে এমন সব কথা শুনি যা রাসুল সাঃ এর কথা হতেই পারে না। কারন আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাঁর কালামে বলেনঃ
৬৯:৪৪> এবং সে (মুহাম্মাদ সাঃ) যদি আমার নামে একটি কথাও বানিয়ে বলত (যা আমার কালাম নয়), ৬৯:৪৫> তবে আমি তার দক্ষিণ হস্ত (ক্ষমতা/ যা তাকে দিয়েছি) ধরে ফেলতাম (নবুয়ত/ রিসালাত/ অহি বন্ধ করে দিতাম), ৬৯:৪৬> অতঃপর কেটে দিতাম তার গ্রীবা ধমনী ( যা কাটলে মানুষ মরে যায়) । ৬৯:৪৭> তখন, তোমাদের কেউ তাকে রক্ষা করতে পারতে না / রক্ষা কারী হতে পারতে না ৬৯:৪৮> নিশ্চয়ই এই কুরআন মুত্তাকীদের জন্যে একটি উপদেশ (মুত্তাকী তো তারাই যারা সর্বদা আল্লাহ্‌ কে স্মরণ করে চলে, সাবধানে চলে, দুনিয়ার যে কোন কাজে আল্লাহর বিষয়ে গাফেল হয় না।)

উল্লেখিত ৬৯ এর ৪৪-৪৮ আয়াত গুলোই প্রমান করার জন্য যথেষ্ট যে,  মুহাম্মাদ সাঃ আল্লাহ্‌র সংবিধান আল কুরআন ছাড়া সুন্নাহ বা কর্ম করেন নাই, কথা বা হাদিস শেখান নাই, কুরআন দিয়েই সব সমস্যার সমাধান করেছেন, যেমনটি আল্লহর প্রেরিত ফেরেশতা জিব্রিল শিখিয়েছেন । আমরাও যেন এমন কোন হাদিস না মানি যা কুরআনের বিপরীত হয়, বিশেষ করে ঈমানের ব্যাপারে কোন রকম ছাড় নয় । কিন্তু এখন এত মতবাদ, এত বিশ্বাসের বিভেদ যে, সবার কাছেই দলিল আছে, সুন্নাহ আছে, হাদিস আছে, তাফসির আছে, ফকিহ আছে, মতবাদের শেষ নেই । কিন্তু কেন আমরা কোরআনকে বুরহান / দলিল রুপে গ্রহন করছি না, মানছি না যে কুরআন না মানলে ঈমান থাকবে না ।
মুখে বলছি কুরআন অবশ্যই মানি কিন্তু বাস্তবে যে ঐ বিষয়টি কুরআনেই নেই। তাহলে কি কুরআন মানা হোল?  যা কুরআনের আয়াতের বিপরীত তা কি রাসুল (সাঃ) বলতে পারেন? যেমনঃ সলাত নিয়ে যত মতভেদ সবই রাসুলের সুন্নাহ এর নামে ভেদাভেদ, পরিনামে এক এক মাজহাব তাদের আবাব্র এক এক দল ইত্যাদি । কিন্তু কুরআনের যে কিয়াম, কিরাত, রুকু নিয়ে কোন গড়মিল নেই- আলহামদুলিল্লাহ । অর্থাৎ রাসুল সাঃ এর জীবনটাই ছিল কুরআন ভিত্তিক জীবন । যেমন পালিত পুত্র নিজ পুত্রের মত নয়, এই নিয়ম বাতিল করতে আল্লাহ্‌ রাব্বুল আলামিন যায়েদ রাঃ এর তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীকে বিয়ে করতে বললেন, হজ্জের যাবতীয় কাজ নিজে পালন করে হজ্জের নিয়ম কানুন শিখিয়ে গেলেন লক্ষ সাহাবিকে, মদিনা জয় করে দেখিয়ে দিলেন পরাজিতদের সাথে কেমন ব্যবহার করতে হয়, সিয়াম এর সময়, সলাতের সময় ইত্যাদি সবই আমরা পেয়েছি সাহাবিদের মাধ্যমে, কুরআনও পেয়েছি তাদের মুখে মুখে তারপর হাতের লেখায়। কিন্তু এসব নিয়ে কোন কথা বা চিন্তার কারন নেই, চিন্তার কারন হয় তখনি যখন আল্লহর সাথে শির্ক হয় । ঈমান নষ্ট করার মত আকিদা সমুহ এবং আমল এর প্রচলন হয় । মানুষ সিরাতল মুস্তাকিম থেকে ছিটকে পড়ে (আল্লাহু আকবর এর পরিবর্তে আল্লাহু – মুহাম্মাদু এর প্রচলন করে) শয়তান তাকে আদর করে কাছে টেনে নেয়, তখন সে মিথ্যার আশ্রয় নেয় । হাজার হাজার হাদিস পড়ে, যা সত্য মিথায় মেশানো কিন্তু মুল কিতাব আলকুরান থেকে অনেক দূরে চলে যায় বুঝতেও পারে না । শয়তান এবং তার সাথীরা মিলে এমন ভাবে মগজ ধোলাই করে যে, কুরআনের পঠিত আয়াত এর সাথে , বয়ানকৃত কিচ্ছা কাহিনীর কোন মিল পাওয়া যায় না, যা মুলত ঐ বর্নিত আয়াতের সাথেও মিলে না, তবুও মানুষ হা করে সব শুনে, মানে । কারন হিসেবে অমুক দেশ, অমুক আলেম, অমুক ফকিহ ইত্যাদির কথা বলে। এ জন্যই আল্লাহ্‌ বলেছেন তারাই কুরআনের আয়াত চুরি করে, সত্য মিথ্যা মিশিয়ে বয়ান করে, বিক্রি করে অর্থে নগদে কিছু উপার্জন করে । এমতাবস্থায় আমাদের সাধারন মানুষ সরল মনে সব বিশ্বাস করে নেয়, আসলে সমাজে হক্ক পন্থী উলামাগনের খুব বেশী প্রয়োজন।

কারনঃ আল্লাহ্‌ বলেন
69:49
৬৯:৪৯> এবং অবশ্যই আমি জানি যে, তোমাদের মধ্যে আছে মিথ্যাবাদী / কিছু লোক মিথ্যার আশ্রয় নেয় ।

অর্থাৎ আল্লাহ্‌ জানেন আমাদের মাঝেই আছে মিথ্যাবাদী, যারা এই কুরআন কে সঠিক ভাবে মানবে না, ১। নিজেদের কথা কে রাসুল সাঃ এর নামে হাদিস বলবে, যা রাসুল সাঃ এর বানী নয়।২। যা রাসুল সাঃ করেন নাই, সেগুলোকে সুন্নাহ বলবে, ৩। নিজেদের ব্যাখ্যাকে তাফসির বলবে কিন্তু কুরআন ব্যাখ্যা কৃত , সম্পুর্ন একটি গ্রন্থ, যাতে কোন সন্দেহ নেই ।৪। এ কুরআন এমন যে, যা সত্য মিথ্যার বিভেদ কে প্রমান করে.৫। মুলতঃ আসব সত্যমিথ্যার মিশ্রণ ইচ্ছায় অনিচ্ছায় হয়ে গেছে- যা একটি ফিতনা বা ইমানী পরীক্ষার বিষয় হয়েছে যে, আমরা কি কুরআন কে সঠিক ভাবে মানছি, না-কি ভেজালের মাঝে সঠিক জিনিস খুজতে যেয়ে ভেজালেই হাবুডুবু খাচ্ছি । ৬। হয়ত কিছু কিছু কাহিনীকার তা লিখেছে, কেহ তাহা সত্যায়ন করেছে, এরা সবাই ঐ বানানো বিষয়ে মিথ্যুক এবং দায়ী, পরিনামে আমরা পরবর্তী প্রজন্ম এর ভুক্তভোগী ।
এজন্যই আল্লাহ্‌ বলেনঃ
৬৯:৪১> এবং এটা কোন কবির কথা ন; তোমরা কমই বিশ্বাস কর ৬৯:৪২> এবং এটা কোন কাহিনিকারের বানী / কাহিনী নয়
২:৭৯> অতএব তাদের জন্যে আফসোস! যারা নিজ হাতে গ্রন্থ লেখে এবং বলে, এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ-যাতে এর বিনিময়ে সামান্য অর্থ গ্রহণ করতে পারেঅতএব তাদের প্রতি আক্ষেপ, তাদের হাতের লেখার জন্য এবং তাদের প্রতি আক্ষেপ, তাদের উপার্জনের জন্যে

হে প্রিয় পাঠক, একবার ভাবুন যে কিতাব পড়া লেখা করলে, কোন আয়াত নিয়ে গবেষণা করলে আল্লাহ্‌র রহমত পতিত হয়, ( তাঁরা কেন কোরআন নিয়ে গবেষণা করে না ?) তা বাদ দিয়ে কিসের আশায় কিসের সাথে কি মিলানোর জন্য মানুষের লেখা কিতাবের সাগরে সাঁতরে বেড়াচ্ছে। কারন, মানুষ নগদ পেতে বেশী ভালবাসে, দুনিয়ায় যা কিছু তাঁরা পেয়েছে, পাচ্ছে এতেই তাঁরা মহা খুশি । মুলত দুনিয়া ক্ষণস্থায়ী, এখানে নকল / জাল যা কিছু পাবেন, দেখবেন কোন না কোন ভাবে কারো স্বার্থ হাসিলের জন্য জাল হাদিসটি বানানো হয়েছে, যা কোন না কোন সহিহ হাদিস কে ঢেকে রাখার জন্য । যে চাকরি ঈমাম সাহেব করলেন লা, তাঁকে জেলে দেয়া হোল কিন্তু সেই চাকরি করলো তাঁরই সাগরেদ।

আর জন্নেই আল্লাহ্‌ বলেনঃ
87:16
৮৭;১৬> বস্তুতঃ তোমরা পার্থিব জীবনকে অগ্রাধিকার দাও,

আল্লাহ বলেনঃ
2:204
২:২০৪> আর এমন কিছু লোক রযেছে যাদের পার্থিব জীবনের কথাবার্তা তোমাকে চমৎকৃত করবেআর তারা সাক্ষ্য স্থাপন করে আল্লাহকে নিজের মনের কথার ব্যাপারে ( বলবে- আল্লাহ্‌র কসম, আল্লাহকে সাক্ষী রেখে বলছি- নবী কবরে জিন্দা, আমার নবী হায়াতুন্নাবী, জিন্দা নাবী, নবীদের দেহ পচে না, মাটি খায় না/ হজম করে না)প্রকৃতপক্ষে তারা কঠিন ঝগড়াটে লোক (কসম করে, বাহাস করে)
2:28
আল্লাহ্‌ বলেনঃ
2:28> কেমন করে তোমরা আল্লাহর ব্যাপারে কুফরী অবলম্বন করছ?( এত সব কথা বলছ- যা আমার কথা নয়, তা নবীর কথাও নয়)  অথচ তোমরা ছিলে নিষ্প্রাণঅতঃপর তিনিই তোমাদেরকে প্রাণ দান করেছেন (তোমরা কে কেমন আমল কর তা দেখার জন্য) , অতঃপর ( এখানে আরবি ছুম্মা দ্বারা একটি নিদিষ্ট কাল পর) আবার মৃত্যু দান করবেনঅতঃপর ( এখানে আরবি ছুম্মা দ্বারা একটি নিদিষ্ট কাল কবরে অতিবাহিত করার পর) পুনরায় তোমাদেরকে জীবনদান করবেন (কেয়ামতের পর হাশরের মাঠে)অতঃপর (ছুম্মা) তারই প্রতি প্রত্যাবর্তন করবে (ইঊ টার্ন করবে)
বিচার দিবসেঃ
২৭:৮৪> যখন তারা উপস্থিত হয়ে যাবে, তখন আল্লাহ বলবেন, তোমরা কি আমার আয়াতসমূহকে মিথ্যা বলেছিলে? অথচ এগুলো সম্পর্কে তোমাদের পুর্ণ জ্ঞান ছিল না নাকি তোমরা অন্য কিছু করছিলে?
অর্থাৎ কোন ধান্দা করছিলে- দুনিয়ায় দু পয়সা নগদ কামানোর জন্য, মান সন্মান ইজ্জৎ পাওয়ার জন্য মিথ্যা বলেছিলে আমার নামে, আমার রাসুলের নামে, অথচ একথা তো জানতে- একদিন আমার কাছে ফিরতেই হবে, মরণ কে বরন করতেই হবে, থাকবে কবরে, পরিশেষে একদিন, সে কঠিন দিনে হাজির হবে।
সেই কিয়ামতে কি হবেঃ
২১:১০৪> সেদিন আমি আকাশকে গুটিয়ে নেব, যেমন গুটানো হয় লিখিত ফরমান (কাগজ/ মাদুর যেমন গোল করে জরানো করা হয়)যেভাবে আমি প্রথমবার সৃষ্টি করেছিলাম, সেভাবে পুনরায় সৃষ্টি করবআমার ওয়াদা নিশ্চিত, আমাকে তা পূর্ণ করতেই হবে
(অর্থাৎ আমরা যেমন কিছুই ছিলাম না এই দুনিয়ায়, আবার নাই হয়ে যাবো এই দুনিয়া থেকে, আবার জীবন পাবো, নতুন ভাবে নতুন জগতে নতুন ভাবে)
এখন প্রস্নঃ তখন  জিন্দা নবির কি হবে, যাঁদের দেহ মাটি খায় না, হজম করে না, সেই মাটির পৃথিবী যখন এক নতুন পৃথিবী হবে? হায়াতুন্নাবীর কি হবে, তিনি কবরেই থাকবেন? কবরেই যদি থাকবেন তবে কি নব রূপে সৃজন হবেন না? )
 আসুন বিষয়টিকে আল কুরআনের আলোতে ভাল করে দেখি,
  • আসলে কবর কি?
  • আমরা মৃত দেহ কে যে কবরে দাফন করি তা কি?
  • আর কিয়ামতে সব ধ্বংস-চুর্ন বিচুর্ন হওয়ার পর যখন নতুন পৃথিবী হবে,  তখন আল্লাহ্‌ কবরস্থদের উঠাবেন , তাহলে সে কবর কি?
  • পৃথিবী ধ্বংসের পরও যা থাকে, যেখান থেকে আবার উঠানো হবে সেই কবর আবার কোথায়?
  • আর আমাদের নবী, রাসুল, সিদ্দিক, শহীদ, গাজি, হিজরত কারীগণ যারা আমাদের নিকট মৃত, আল্লাহ্‌র নিকট জীবিত, রিজিক প্রাপ্ত হচ্ছে, মহা আনন্দে আছে, তাঁরা কোথায়?
  • দুনিয়ার অত্যাচারী, জালিম, পাপিষ্ঠ যারা মারা গেছে তারা কোথায়?
  • আমাদের পিতা মাতা দাদা দাদী যারা আমাদের রেখে চলে গেছেন, তাদের বিষয়ে আল্লাহ্‌ বলেন” তাঁরা কি তোমাদের জন্য কিছুই রেখে যায় নি? তাদের বদৌলতে দুনিয়ায় এসেছ, সম্পদ পেয়েছ, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, মুফতি হয়েছ, তাঁরা যে কিছু আশা করে, তোমরা বুঝ না? তাঁরা কোথায়?
ঃঃ ভুমিকা শেষ ঃঃ
প্রিয় পাঠক ভূমিকা অংশটি ভালকরে অনুধাবন করুন, তারপর আবার পড়া শুরু করুন, এই গবেষণা পত্রে উল্লেখিত আয়াত সমুহ যে সব রুকুর অংশ তা পুরোটা পড়ে আয়াতটি নিয়ে ভাবুন, প্রয়োজনে একই ধরনের আয়াত সমুহ খুজুন, কুরআনকে গবেষণা করুন।
ইহকাল - দুনিয়ার জীবনঃ

6:2

 ৬:২>তিনিই তোমাদেরকে মাটির দ্বারা সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর নির্দিষ্টকাল নির্ধারণ করেছেন (ইহকাল)আর অপর নির্দিষ্টকাল আল্লাহর কাছে আছে (পরকাল) তারপরও তোমরা সন্দেহ কর?

67:15
৬৭:১৫> তিনি তোমাদের জন্যে পৃথিবীকে সুগম করেছেন, অতএব, তোমরা তার কাঁধে/ উপড় বিচরণ কর/ যেদিকে ইচ্ছা যাতায়াত কর (জ্বলে, স্থলে, আকাশে) এবং তাঁর দেয়া রিযিক আহার কর (যেমন মনে চায় ভোগ কর) (কিন্তু জেনে নাও পরিশেষে) তাঁরই কাছে পুনরুজ্জীবন হবে( অর্থাৎ এ জীবনে যেমন খাওয়া-দাওয়া, চলাফেরা , যেমন ইচ্ছা তেমনি সারাদিন পারকরছ, দিন  শেষে মৃত্যুর ন্যায়, মরার মত ঘুমিয়ে পড়ছ, ঘুমের মধ্যে ভাল মন্দ, হাসি খুশির স্বপ্ন দেখছ, কোন স্বপ্নে ভয় পেয়ে চিৎকার দিয়ে জেগে যাচ্ছ, কখনও মৃত প্রিয় জনের সাথে চলা ফেরা করছ -----এই ঘুমের জগতে যা কিছু হচ্ছে এগুলো কি তোমার নিয়ন্ত্রনে ছিল?তুমি কি জানতে কখন তুমি ঘুম থেকে উঠবে?  কিন্তু কেন ভাবনা, একদিন সত্যি সত্যি এই ঘুমের মতই মৃত্যু হবে, থাকবে আমার কাছে কবরের জগতে, তারপর একদিন এই জগত ধ্বংস হবে, নতুন পৃথিবী নুরে উদ্ভাসিত হবে, তোমাদের আবার জীবন দিব, উঠবে, জমায়েত হবে , তোমাদের কর্মফল দেখবে, ফলাফল ভোগ করবে, পরিশেষে আমার কাছেই ফিরবে।

এ ছাড়াও আর এক প্রকার অবস্থায় এই দুনিয়াতেই তোমরা পতিত হও, কিন্তু কোন কিছুতেই আল্লাহর বিষয়ে সাবধান হও নাঃ আল্লাহ্‌ বলেনঃ

যে কোন সময় আমরা ইহজগৎ ত্যাগ করতে পারি, এ বিষয়ে কারো কোন অবিশ্বাস নাই, অবিশ্বাস হোল বিচার দিবসে আবার জীবন দেয়া হবে, এই বিষয়টি আল্লাহ্‌ যে কত ভাবে বুঝাতে চান তার ইয়ত্তা নেই।

৩৯:৪২> মৃত্যুর সময় ঘনিয়ে এলে আল্লাহ মানুষের প্রাণ হরণ করেন, আর যাঁদের মৃত্যু কাল হয় না, ওদের চেতনা বিদুরন করিরা থাকেন যখন সে নিদ্রায় /তার নিদ্রাকালে / অথবা ICU তে চেতনাহীন (দিনের পর দিন, তোমরা সবাই তখন আমাকেই ডাকো) অতঃপর যার মৃত্যু অবধারিত করেন, তার প্রাণ ছাড়েন না ( প্রান হরন কারীরা প্রান নিয়ে নেয়) এবং অন্যান্যদের ছেড়ে দেন এক নির্দিষ্ট সময়ের জন্যে (যত দিন হায়াত আছে, স্বাভাবিক ভাবে কথা বল, কিন্তু তুমি জানো না কতদিন ICU তে চেতনাহীন ছিলে) নিশ্চয় এতে চিন্তাশীল / গবেষক / যারা ফিকির করে/ লোকদের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে
( তার পরও মানুষ তোমরা বুঝ না, এই দুনিয়ার জীবনকেই বেশী ভালবাস, কিন্তু কদিন আগেই মরার মত শুয়েছিলে, কত দিন ছিলে তাও জানো না)
পানিচক্র, গাছের জীবনচক্র,আমদের জীবনচক্র সবই একই রকমঃ মনে হয় কিছুই নাই, আবার দেখি সত্যি সত্যি আছে, আবার নাই, আবার জীবনঃ
18:45
১৮;৪৫> তাদের কাছে পার্থিব জীবনের উপমা বর্ণনা করুনতা পানির ন্যায়, যা আমি আকাশ থেকে নাযিল করি (মৃত ন্যায় পড়ে থাকা জমিনের ঊপর)অতঃপর এর সংমিশ্রণে (জমিনে যা লুকিয়েছিল – বীজ, তা থেকে) শ্যামল সবুজ ভূমিজ লতা-পাতা নির্গত হয় (যা তোমাদের এবং পশু পাখির জন্য- এটাই দুনিয়ার জীবন); অতঃপর তা এমন শুস্ক চুর্ণ-বিচুর্ণ হয় যে, বাতাসে উড়ে যায় (মরন রুপ – যেন সেখানে কিছুই ছিল না)আল্লাহ এ সবকিছুর উপর শক্তিমান
হে পাঠক, একটু ভাবুন, দেখুনঃ মেঘ মুক্ত নীল-আকাশ, দিনের পর দিন, মাসের পর মাস, মানুষের কোনই ক্ষমতা থাকে না আকাশে মেঘ নিয়ে আসতে, বৃষ্টি ঝরাতে । তারপর একদিন- আকাশে মেঘ জমে, বজ্র বৃষ্টি হয়, মাঠে মাঠে সবুজের সমারহ হয়, ফুল-ফল হয়। একই ভাবে আমদের মানব জীবন, যখন পিতা-মাতার সংসারে, মাতৃগর্ভে বিশেষ পানির মিশ্রণের ঠাই হয়, আমারা ধীরে মানব রূপ লাভ করি, যেমন শুষ্ক বীজে পরিমিত মাটি,আলো, বাতাস এর সাথে পানির মিস্রনে অঙ্কুর বের হয়, তারপর বড় হয়, ফুল ফল হয়, একদিন ঐ গাছ মারা যায়, অনুরুপ আমাদের মানব জীবন ।

মানব জীবনঃ তোমরা কি মৃত্যুর পর আবার জীবন পাবে, হিসাব হবে, ফলাফল ভোগ করবে এ সব বিষয়ে এখনও সন্দেহ করঃ আল্লাহ্‌ বলেনঃ
সুরা হাজ্জ ২২:৫>হে লোকসকল! যদি তোমরা পুনরুত্থানের (কবর থেকে উঠার)ব্যাপারে সন্দিগ্ধ হও, তবে (ভেবে দেখ-) আমি তোমাদেরকে মৃত্তিকা থেকে সৃষ্টি করেছি ( এই মাটি থেকে যেমন খাদ্য এবং পানি পাও, যা খেয়ে বড় হও, এভাবেই মাটি থেকে যা তোমাদের শরীরে ঠাই নেয়, তা থেকেই তোমাদের জীবনচক্র শুরু হয়- মাটির নির্জাস থেকে) । এরপর নুতফা (বিশেষ পানি) থেকে, এরপর জমাট রক্ত থেকে, এরপর পূর্ণাকৃতিবিশিষ্ট ও অপূর্ণাকৃতিবিশিষ্ট মাংসপিন্ড থেকে, তোমাদের কাছে ব্যক্ত করার জন্যে (তোমাদেরকে সৃষ্টির উদ্দেশ্য বলার জন্য) । আর ( ভেবে দেখ) আমি এক নির্দিষ্ট কালের জন্যে মাতৃগর্ভে যা ইচ্ছা রেখে দেই, এরপর আমি তোমাদেরকে শিশু অবস্থায় বের করি; তারপর যাতে তোমরা যৌবনে পদার্পণ কর (যেন তোমাদের বংশ বিস্তার করতে পারো) । তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ মৃত্যুমুখে পতিত হয় (অকালেই) এবং তোমাদের মধ্যে কাউকে নিষ্কর্মা বয়স (অতিবৃদ্ধ) পর্যন্ত পৌছানো হয়, যাতে সে জানার পর জ্ঞাত বিষয় সম্পর্কে সজ্ঞান থাকে না (বুদ্ধি লোপ পায়, এত বৃদ্ধ হয় যেন শিশুর মত আচরন করে)(ঠিক) তুমি যেমন ভূমিকে পতিত দেখতে পাও (মনে হয় এই শুষ্ক জমি, ধুলা-বালি, এতে কিছুই জন্মাবে না) , অতঃপর আমি যখন তাতে বৃষ্টি বর্ষণ করি, তখন তা সতেজ ও স্ফীত হয়ে যায় এবং সর্বপ্রকার সুদৃশ্য উদ্ভিদ উৎপন্ন করে।( একই ভাবে তোমার মাঝেই জীবন রূপ নুতফা, তা কি খুজে পাবে? বুকের এবং পিঠের হাড়ের সংযোগ স্থল থেকে তার সৃষ্টি, মুলতঃ তোমরা যখন একে অপরের সাথে মিলিত হও, তোমাদের জীবনচক্র শুরু হয়)।

হে মানুষ জাতি শুনঃ এই দুনিয়ার জীবন এবং দুনিয়াতে যা কিছু দিয়েছি, তা তোমাদের জীবন যাপনের জন্য এজন্য যে কে কেমন কর্ম কর, তোমরা আমাকেই স্মরণ করো নাকি করো না, মান না, না কি আমার সাথে শরীক করো অন্য কাহাকেও কিন্তু একথা ভুলিও না, খুব শিগ্রই আমার নিকট ফিরবে, আমার কাছে আছে উত্তম ও স্থায়ী জীবন, যেখানে আর মরণ নাই । আল্লাহ্‌ বলেনঃ
২৮:৬০> তোমাদেরকে যা কিছু দেয়া হয়েছে, তা পার্থিব জীবনের ভোগ ও শোভা বৈ নয়আর আল্লাহর কাছে যা আছে, তা উত্তম ও স্থায়ী (আরেকটি জগত আছে, আরেকটি কাল আছে, যেখানে এই দুনিয়ার কর্মফল ভোগ করবে) তোমরা কি বোঝ না ? (তোমরা দুনিয়ার মোহে পরকালকে ভুলে যাও)

২৮:৬১> যাকে আমি উত্তম প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, যা সে পাবে(পরকালে), সে কি ঐ ব্যক্তির সমান, যাকে আমি পার্থিব জীবনের ভোগ-সম্ভার দিয়েছি (দুনিয়ায়তেই সে ফল ভোগ করেছে), অতঃপর তাকে কেয়ামতের দিন অপরাধীরূপে হাযির করা হবে?
(দুনিয়ার সম্পদ কোন কাজে আসবে না, মুলতঃ দুনিয়ার সম্পদ, শক্তি খরচ করেই পরকালকে জয় করতে হয়, আল্লাহ্‌ কে পেতে হয় । এজন্যই যারা আল্লাহ্‌র নিকট পরিপুর্ন ঈমান এনে মুখলিস বান্দা হয়ে তাঁর কাজে লেগে যায়, আল্লাহ্‌ তার ঐ বান্দার কর্মফল জমা করে রাখেন, আর যারা দুনিয়ার সম্পদের পিছে লিগে থাকেন, সত্য মিথ্যা, হালাল হারাম এর ধার ধারে না , তারা তো দুনিয়াতেই বাড়ি গাড়ি ইজ্জৎ পেয়ে যায়, তাই তাদের খালি হাতেই ফিরতে ফিরবে, পথরে ধূলা জমে পাথরের রং বদলালেও, ঝড়বৃষ্টিতে তা উঠে আসলটাই বেড়িয়ে পড়ে ), কারনঃ
৬:২৯> তারা বলেঃ আমাদের এ পার্থিব জীবনই জীবনআমাদেরকে পুনরায় জীবিত হতে হবে না (অর্থাৎ এরা পরকালকে বিশ্বাসই করে না)

আল্লাহ আমাদের উদ্দেশ্য আবার বুঝিয়ে বলেন, শুনঃ
৬:৩২> পার্থিব জীবন ক্রীড়া ও কৌতুক ব্যতীত কিছুই নয়পরকালের আবাস পরহেযগারদের/ মুত্তাকীদের জন্যে শ্রেষ্টতরতোমরা কি বুঝ না ? ( কিন্তু আল্লাহ্‌ কত মহান, কত সুন্দর ভাবে তার কথা বলছেন, ওহে আদম সন্তান শুনে নাওঃ তোমরা তো এক দিন কিছুই ছিলে না, কিন্তু এই দুনিয়ায় এসে সব কিছু দেখে, আমাকে ভুলে গেলে, পরকালকে ভুলে গেলে, এই পার্থিব জীবন ক্রীড়া ও কৌতুক ব্যতীত কিছুই নয়)

পরকালের জিবনঃ
 মরণ কে বরন করেই পরকালে বা পরলোকে গমন করতে হয়।
সুরা নহল> ১৬:৭৭> নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের গোপন রহস্য / গায়েব আল্লাহর কাছেই রয়েছে। কিয়ামতের/ পরলোকের / মৃত্যুর ব্যাপারটি তো এমন, যেমন চোখের পলকের ন্যায় অথবা তার চাইতেও নিকটবর্তী । নিশ্চয় আল্লাহ সব কিছুর উপর শক্তিমান।


৩০;৫০> অতএব, হে শ্রবণকারী আল্লাহর রহমতের চিহ্ন লক্ষ কর, দেখে , কিভাবে তিনি মৃত পড়িয়া থাকা ভুমিকে মৃত্যুর পর জীবিত করেননিশ্চয় তিনি এরুপে মৃতদেরকে পুনঃ জীবিত করবেন এবং তিনি সব কিছুর উপর সর্বশক্তিমান
## তোমরা নীল আকাশ দেখেছ যখন আকাশে মেঘ নেই , আবার আকাশে মেঘ জমে, পরে বৃষ্টি হয়, বৃষ্টির মাটিতে মিশে যায়, শুষ্ক জমিন- যেন মরুভুমির মত জীবন হীন মৃত ছিল, সেই মৃত জমিন থেকে লতা পাতা ইত্যাদি জন্মে সবুজ হয় ।ফল দেয়,  আবার মরে যায়, এক সময় বাতাস সব উড়িয়ে নিয়ে বিরান মরুভুমি করে দেয় যেন জীবন সেখানে ছিলই না ।
41:39

৪১:৩৯> তাঁর অন্যতম নিদর্শন এই যে, তুমি ভূমিকে দেখবে শুষ্ক দেখিতে পাও, অতঃপর আমি যখন তার উপর বৃষ্টি বর্ষণ করি, তখন সে সক্রিয় ও স্ফীত হয়নিশ্চয় যিনি একে জীবিত করেন, তিনি জীবিত করবেন মৃতদেরকেও নিশ্চয় তিনি সবকিছুর উপর শক্তিশালী
45:26
সুরা আল যাসিয়া ৪৫;২৬> আপনি বলুন, আল্লাহই তোমাদেরকে জীবন দান করেন, অতঃপর মৃত্যু দেন, অতঃপর তোমাদেরকে কেয়ামতের দিন একত্রিত করবেন, যাতে কোন সন্দেহ নেইকিন্তু অধিকাংশ মানুষ কিছুই জানে না / বোঝে না
50:43
সুরা কাফ  ৫০;৪৩> নিশ্চয়ই আমরাই জীবন দান করি, মৃত্যু ঘটাই এবং আমাদের দিকেই  সকলের প্রত্যাবর্তন
# এই মাটি থেকেই জন্ম, এই মাটিতেই জীবন, এই মাটিতেই দাফন, এই মাটি থেকেই কিয়ামতের পর পুনরুত্থান ।
7:25
সুরা আল আরাফ ৭;২৫> বললেনঃ তোমরা সেখানেই জীবিত থাকবে, সেখানেই মৃত্যুবরন করবে এবং সেখান থেকেই পুনরুঙ্খিত হবে

# খুবই পরিচিত একটি আয়াত, যা দাফন করার স্মরণীয় দোয়াঃ
20:55
সুরা তাহা ২০;৫৫ > এ মাটি থেকেই আমি তোমাদেরকে সৃজন করেছি, এতেই তোমাদেরকে ফিরিয়ে দিব এবং পুনরায় এ থেকেই আমি তোমাদেরকে বাহির করিব ( যেমন আমরা সকালে ঘুম থেকে জেগে সারাদিন যা ইচ্ছা করি, দিন শেষে ক্লান্ত হয়ে বিছানায় মৃত মানুষের মত শুয়ে পড়ি, ঘুমের অবস্থায় কত রকম স্বপ্ন দেখি- যা আমাদের নিয়ন্ত্রনে নহে, আবার ঘুম থেকে জাগি এভাবেই ক্ষণস্থায়ী এ দুনিয়ায় জীবন মরনের অনুরুপ চলছে, একদিন যখন মরনরুপ ঘুম হবে ( শুরু হবে কবরের জগত) অতপর, উঠবো হাশরের মাঠে, তখন মনে হবে ঘুমটা ছিল সকাল বা বিকালের কিছু অংশ মাত্র ।

কবর ও কিয়ামত
কেহ লাশ পুড়ে ফেলে, ছাই ভস্ম পানিতে ফেলে দেয়, বাতাসে উড়িয়ে নেয় । আমাদের কেহ মারা গেলে, তার উপর সলাত আদায় (দোয়া/ প্রার্থনা) করে, মাটিতে গর্ত খুঁড়ে বিশেষ কায়দায়  সেখানে লাশ পুতে রাখি । এই লাশ পুঁতে রাখার পদ্ধতিই আমাদের নিকট কবর । এই কবর দেয়ার পদ্ধতি এক এক দেশে, এক এক ধর্মে এক এক রকম ।
এই লাশ দাফন করার পদ্ধতি আল্লাহ মানুষ কে শিখিয়েছেন একটি কাকের মাধ্যমে, যখন আমাদের ভাই কাবিল তার আপন ভাই হাবিল কে খুন করে ফেলল ।

সুরা মায়েদা>৫:৩১> আল্লাহ একটি কাক প্রেরণ করলেনসে মাটি খনন করছিল যাতে তাকে শিক্ষা দেয় যে, আপন ভ্রাতার মৃতদেহ কিভাবে আবৃত করবেসে বললঃ আফসোস, আমি কি এ কাকের সমতুল্যও হতে পারলাম না যে, আপন ভ্রাতার মৃতদেহ আবৃত করিঅতঃপর সে অনুতাপ করতে লাগল
(পাঠক, আপনাদের বিবেকের জন্য একটি প্রশ্ন ? এখানে কুরআনে বলা হচ্ছে একটি কাক পাঠালেন আল্লাহ্‌ । আর আমরা জানি দুইটি কাক এলো মারামারি করে একটি নিহত হল, তখন অপর কাকটি মৃত কাকটিকে মাটি খুঁড়ে দাফন করল/ কবর/ দিল, ঢেকে ফেলল । এ দৃশ দেখে কাবিল বললঃ আফসোস, আমি কি এ কাকের সমতুল্যও হতে পারলাম না যে, আপন ভ্রাতার মৃতদেহ আবৃত করিঅতঃপর সে অনুতাপ করতে লাগল) প্রিয় পাঠক, দেখুন একটি আয়াতের মধ্যে কি ভাবে মিথ্যা প্রবেশ করেছে, একটি কাক কে দুটি কাক বানানো হয়েছে, এ নিয়ে কত কাহিণী লেখা হচ্ছে, বলা হচ্ছে ।)

কেয়ামতের কারনঃ
## কেয়ামতের বর্ণনা কোরানে আছে, তা এক ভয়াবহ ঘটনা, তা ঘটার উদ্দেশ্য হল কবরস্থ যারা আছে তাদের আবার জীবিত করবেন, হিসাব হবে ইত্যাদি যত বর্ণনা আছে কোরানে বিশেষ করে সুরা ৬৯-হাক্কাহ, ৭০-মাআরিজ, ৭৫-কিয়ামাহ, ৭৭-মুরসালাত বুঝে বুঝে পড়ুন-
২২;৭> এবং এ কারণে যে, কেয়ামত অবশ্যম্ভাবী, এতে সন্দেহ নেই এবং এ কারণে যে, কবরে যারা আছে, আল্লাহ তাদেরকে পুনরুত্থিত করবেন
৮০:২১>  অতঃপর (আল্লাহ্‌) তার মৃত্যু ঘটান ও কবরস্থ করেন তাকে
৮০;৮২> এরপর যখন ইচ্ছা করবেন তখন তাকে পুনরুজ্জীবিত করবেন
## আল্লাহই মৃত্যু ঘটান এবং তিনিই তাকে কবরস্থ রেখে দেন। তাহলে বুঝা যাচ্ছে আমরা যে কবরে রাখি তা মুলতঃ পচনশীল বস্তুকে পুঁতে ফেলার একটি কৌশল মাত্র , যেটা কাক মারফৎ আমরা শিখেছি । আর এই কাকের সাথে পচনশীল বস্তুর একটি সম্পর্ক আছে, তা হল কাক পচা মরা জীব জন্তু ভক্ষন করে, ২য়তঃ স্বভাব হল অতিরিক্ত খাবার পড়ে খাবে ভেবে লুকিয়ে / ঢেকে রাখে । দেখুন আল্লাহ্‌ একটি আয়াত দিয়ে কত কিছুর প্রতি ইঙ্গিত দেন । অর্থাৎ আমরা কাকের মত ঢেকে রাখি , যাকে আমরা কবর বলি, কিন্তু আল্লাহ্‌ বলছেন তিনি মৃত কে কবরস্থ করেন

আসুন আরেকটু সামনে যাওয়া যাকঃ
35:22
সুরা ফাতির ৩৫;২২> আরও নহে সমান জীবিত ও মৃত আল্লাহ যাকে ইচ্ছা শ্রবণ করান তুমি কবরে শায়িতদেরকে শুনাতে পারবে না। ২৩> তুমি কেবল একজন সতর্ককারী । ( রাসুল সাঃ গায়েবের সংবাদ বা খবর আমাদের নিকট পৌঁছে দিয়েছেন, যা আমরা জানতাম না, রাসুল সাঃ কে যে গায়েব জানানো হয়, দেখানো হয়, আমাদের জানাতে বলা হয়, শুধু তা-ই করেন, তার অতিরিক্ত কোন গায়েবি ক্ষমতা নাই, শুধু তাই নয়- রাসুল সাঃ এর এই গায়েবের সংবাদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকেন নিরাপত্তারক্ষাকারী ফেরেশতা- যেন শয়তান তাঁকে ধোঁকায় না ফেলে । এক মাত্র আল্লাহ্‌ই পারেন যা ইচ্ছা তাকে শুনাতেঃ যেমন আগুন কে বললেন- ইব্রাহীমের জন্য আরামদায়ক হও, সাগর কে বললেন মুছার জন্য রাস্তা করে দাও, ৩০৯ বছর পর, ১০০ বছর পর তাদের জাগিয়ে দিলেন, পাথর থেকে ১২টি পানির ধারা ছড়িয়ে পড়ল, মাটির পাখি উড়ে গেল, মৃত মানুষ জীবন পেল- সাক্ষী দিয়ে আবার মারা গেল, চাঁদ দিখন্ড হোল ইত্যাদি)

100:9
আল আদিয়াত ১০০;৯>সে (মানুষ) কি জানে না, যখন কবরে যা আছে, তা উত্থিত হবে ? ১০> প্রকাশ করা হবে (তার) সুদুরে যা আছে । (এত কিছু কুরআনে পড়ে জানছ, বুঝতেছ, তারপরও জানো না? না কি তোমরা নিজের মনের সাথে প্রতারনা করছ ?)
60:13
সুরা মুমতাহানাহ ৬০;১৩> হে মুমিনগণ, আল্লাহ যে জাতির প্রতি রুষ্ট, তোমরা তাদের সাথে বন্ধুত্ব করো নাতারা পরকাল সম্পর্কে নিরাশ হয়ে গেছে যেমনটি নিরাশ হয়েছে কাফেররা কবরবাসীদের বিষয়ে । ( দুনিয়ার সবাই তো জানে, কবর কি, কিন্তু এরা কারা , আর এ কবরই বা কেমন যা তারা অবিশ্বাস করছে, আল্লাহ্‌ বলছেন কবর বাসীদের কথা- আসহাব আল কবর, অর্থাৎ কবরে যারা আছে । কিন্তু আমরা বাস্তবে দেখছি যে, কবরের উপর কবর দেয়া হচ্ছে, মুটামুটি নতুন কবরে কিছু হাড়ের নমুনা পাওয়া গেলেও পুরাতন কবরে তো কিছুই পাওয়া যায় না। অথচ আল্লাহ্‌ বলছেন কবরের বাসিন্দা বা কবরে যারা আছে। এ জন্যই কি তারা অবিশ্বাস করছে যে, যে কবর মাটি হয়ে গেছে, কিছুই দেখার নাই, তা মানি না), তাহলে আল্লাহ্‌ যে বলছেন কবরবাসী ।
তাহলে বুঝা যাচ্ছে
কবর মানে মাটির কবর নয়,
আরও বেশী কিছু ।
এই কবর, সেই কবর নয়
আরও কবর আছে ।

মৃত্যুর সাথে সাথেই
যে কবরে তার হয়ে গেছে ঠাই,
সেটাই তো আসল কবর, ভাই ।

লাশটিকে কবরে সমাহিত করা
তোমাদের বিধান মাত্র, তাই।

যেমনঃ নদী ভাঙ্গনে কারো কবর পানিতে ভেসে গেল, কাহাকেও সাগরে ভাসিয়ে নিয়ে গেল, মৃত কে নদীতে ভাসিয়ে দাফন করা হল, কাহাকেও বাঘে খেয়ে ফেলল, কেহ আগুনে পুরে ভস্ম হয়ে গেল, ইত্যাদি অবস্থায় কবরের কি হল? কবর হল কি? এজন্য আল্লাহ্‌ বলেনঃ (আল্লাহ্‌)  অতঃপর তার মৃত্যু ঘটান ও কবরস্থ করেন তাকে{৮০;২১}
এ জন্নেই অবিশ্বাসীরা পরকাল সম্পর্কে নিরাশ হয়ে গেছে যেমনটি নিরাশ হয়েছে কাফেররা কবরবাসীদের বিষয়ে । এই বলে যে মাটিতে মিশে গেলে বাঘে খেলে, আগুনে পুড়ালে আর কি কিছু থাকে? , কিসের কবর ? কিন্তু বিশয়টি কি আসলে তাই?
(হে পাঠক, এখন একটু ভাবুন, বিরতি নিন, গল্পের মত আর না পড়ুন ।)

বিরতি-২

00------00











সুরা আল ইনফিতার-৮২;১,২,২,৪
82:1
যখন আকাশ বিদীর্ণ হবে,
যখন নক্ষত্রসমূহ ঝরে পড়বে,       82:2
যখন সমুদ্রকে উত্তাল করে তোলা হবে,  82:3
এবং যখন কবরসমূহ উম্মোচিত হবে,82:4
81:7
৮১;৭> যখন আত্মাসমূহকে তোমাদের নিজেদের সাথে পুনঃসংযোজিত করা হবে
প্রশ্নঃ আল্লাহ্‌ বলছেন কিয়ামতের পর আমাদের সাথে আমাদের আত্মা পুনঃসংযোজিত করা হবে, আর হাদিসের কথা উল্লেখ করে নাবীর সাঃ নামে বলা হচ্ছে সালাম দিলেই নাবীর দেহে রুহ আসে, কবরে থেকেই সালাম এর জবাব দেন। যা কোরআনে নাই তা রাসুল সাঃ বলতে পারেন ?
আল্লাহ্‌ বলেনঃ কবরে শায়িতদের শুনাতে পারবে না (৩৫:২২)
কিন্তু যারা কবরের জগতে চলে গেছে তাদের জন্য আমারা আল্লাহ্‌র নিকট দোয়া বা প্রার্থনা বা বিশেষ সলাত আদায় করতে পারব। তাদের সাথে সরাসরি যোগাযোগের কোন উপায় আমাদের নাই।

আমরা আমাদের হাতে যে কবর খুঁড়ি, লাশ দাফন করি, তা আমাদের কাজ, কাজটি করলে পুণ্য হবে, না করলে পাপ হবে আমাদের ।  আর মৃত দেহ পচে গলে মাটিতে মিশে যাবে – এই মিশে যাওটাই স্বাভাবিক তাই পরকালে অবিশ্বাসীরা বলেঃ

৫৬:৪৭> এবং ওরা (পাপিষ্ঠরা) বলিত, আমরা কি মরিয়া ও মাটিতে/ তুরাবে পরিণত হলে এবং হাড়ে পরিণত হলেও পুনরুত্থিত হব ?
৫৬:৪৮> আমাদের পুর্ব পুরুষগণও ? ৫৬:৪৯> বলে দাওঃ পূর্ববর্তী পরবর্তী সবাইকে ৫৬:৫০> একত্রিত করা হবে ।
২৩:৩৫> সে কি তোমাদেরকে এই ওয়াদা দেয় যে, তোমরা মারা গেলে এবং মৃত্তিকা ও অস্থিতে পরিণত হলে তোমাদেরকে পুনরুজ্জীবিত করা হবে?
৩৭:৫৩> আমরা যখন মরে যাব এবং মাটি ও হাড়ে পরিণত হব, তখনও কি আমরা প্রতিফল প্রাপ্ত হব?
২৩:৮২> তারা বলেঃ যখন আমরা মরে যাব এবং মৃত্তিকা ও অস্থিতে পরিণত হব, তখনও কি আমরা পুনরুত্থিত হব ?
৩৬:৭৮> সে আমার সম্পর্কে এক অদ্ভূত কথা বর্ণনা করে, অথচ সে নিজের সৃষ্টি ভুলে যায়। সে বলে কে জীবিত করবে অস্থিসমূহকে যখন সেগুলো পচে গলে যাবে?
৩৭:১৬> আমরা যখন মরে যাব, এবং মাটি ও হাড়ে পরিণত হয়ে যাব, তখনও কি আমরা পুনরুত্থিত হব?
৩৭:৫৩> আমরা যখন মরে যাব এবং মাটি ও হাড়ে পরিণত হব, তখনও কি আমরা প্রতিফল প্রাপ্ত হব?
৮৯:২১> এটা অনুচিত। যখন পৃথিবী চুর্ণ-বিচুর্ণ হবে
#মানুষ ভাবে তার বিচ্ছিন্ন হাড় গুলি আবার কিভাবে একত্রিত করবেন?
 79:10
সুরা নাযিয়াত ৭৯:১০> তারা বলেঃ আমরা কি পূর্বাবস্থায় প্রত্যাবর্তিত হব ?
79:11
সুরা নাযিয়াত ৭৯:১১> আমরা যখন বিগলিত অস্থিতে পরিণত হব?
#আল্লাহ্‌ তার বিচ্ছিন্ন হাড় গুলি আবার একত্রিত করতে পারবেন না ? আল্লাহ্‌ বলেনঃ
75:4
সুরা কিয়ামাহঃ ৭৫;৪> হ্যাঁ , আমি তার অংগুলিগুলো (fingertips)  পর্যন্ত সঠিকভাবে সন্নিবেশিত করতে সক্ষম

## (মুলতঃ এ সব মানুষ যারা মাটির কবরে বিশ্বাসী, তারা দুনিয়ায় এমন ভাবে সম্পদের পিছে লেগে থাকে যে তার মৃত্যুর কথা অর্থাৎ কবরের কথা, আল্লাহ্‌র সাথে সাক্ষাৎ এর কথা ভুলে যায় । বৃদ্ধ হয়ে গেছে, যাকে আমরা বলি এক পা কবরে গেছে, ক্যান্সারে আক্রান্ত, দুদিন পরেই নিশ্চিন্ত মৃত্যু, তবুও কবরের প্রতি ঈমান লয় না, অর্থাৎ তারা জানে মরে যাবে,  কবর হবে  । জানে, কিন্ত তারা আল্লাহর সাক্ষাৎ, আল্লাহ্‌ যে কবরের কথা বলেছেন সেই কবর,  কিয়ামত, পুনরুত্থান এসব বিশ্বাস করে না, কারুনও করে নাই, বলেছে এসব সম্পদ আমি অর্জন করেছি ) তাই তো আল্লাহ্‌ বলেনঃ তোমরা এনন ভাবে দুনিয়ার পিছনে লেগে থাকো যতক্ষণ না মরণ আসে, কবরে পৌঁছে যাও।)
102:2
সুরা আত তাকাসুর ১০২;২> এমনকি, তোমরা কবরস্থানে পৌছে যাও ।  


লাশ বা মরদেহ
লাশ বা মরদেহ সন্মন্ধে আল্লাহ্‌ কি বলেনঃ যখন আমরা এসব বিষয়ে বলি যে, অমুক লাশ পচে নাই- দেহ অবিকল আগের মত আছে, অমুকের লাশ ৫০, ১০০ বা ৫০০ বছর পরেও এখন লাশ মজুত আছে, কোন অঞ্চলে নদী ভাঙ্গনের সময় এরকম মৃত দেহ বের হয়, আবার দাফন করা হয় বলে অনেকেই বলেন, এমন কি ওরা রাসুল সাঃ এর কবর নিয়ে যা বলছে, যেমন পূর্বে নবীকে যাদুকর, উন্মাদ ইত্যাদি বলেছে, এখন সেই নাবীর উম্মাতের কিছু লোক সেই নাবীকে এত ভক্তি করছে যে- তাদের জিন্দা নাবিকে কবরে শুইয়ে রেখেছে, ভক্ত, আশেকদের জন্য হাত বের করে দিচ্ছে, কিন্তু কত নিষ্ঠুর এই ভক্তরা তাকে কবর থেকে বের করছে না, কেন?
রাসুল সাঃ এর এক ভক্তঃ ছেলেদের ডেকে ওয়াসিয়ত করছে, শুনঃ আমি মারা গেলে আমার কবর প্রায় ৭ ফুট গভীর করবে, ছেলেরা বলঃ কেন বাবা? বাবা বল্লেনঃ কবরে যখন আমার রাসুল সাঃ আসবেন তখন কি আমি শুয়ে শুয়ে সালাম দিব আমার নাবিকে?
আরব দেশের কবর এবং আমাদের দেশের কবর কাটার ধরন এক রকম নয়। আরব দেশে, আমদের দেশের মত বক্স/ সিন্দুক আকৃতির গর্ত করার পর তলা থেকে আরেকটি বক্স আকৃতির পকেট কাটা হয়, ঐ পকেটে বা সাইড বক্সে লাশ ঢুকিয়ে দিয়ে, সাইডে কোন কিছু দিয়ে বাঁধা দিয়ে, ঘাস দিয়ে রেখে প্রধান গর্তটি/ মুল কবরটি সম্পুর্ন মাটি দিয়ে ভরে দেয়া হয় ।
 

কিন্তু আল্লাহ্‌ বলেন -  মুলতঃ কবর সন্মন্ধে আসল বিষয়টিই ওরাবুঝে নাই, এই কবর সেই কবর নয়, তোমরা যে দেহ নিয়ে কথা বলছো
১৭:৪৮> দে, ওরা তোমার কি মেছাল দেয়ওরা পথভ্রষ্ট হয়েছেঅতএব, ওরা পথ পেতে পারে না ১৭:৪৯> ওরা বলেঃ যখন আমরা অস্থিতে পরিণত ও চূর্ণ বিচূর্ণ হয়ে যাব, তখনও কি নতুন করে সৃজিত হয়ে উত্থিত হব? ১৭:৫০> বলুনঃ তোমরা পাথর হয়ে যাও কিংবা লোহা ১৭:৫১> অথবা এমন কোন বস্তু, যা তোমাদের ধারণায় বাহিরে; তথাপি তারা বলবেঃ আমাদের কে পুর্নবার কে সৃষ্টি করবে বলুনঃ যিনি তোমাদেরকে প্রথমবার সৃজন করেছেনঅতঃপর তারা আপনার সামনে মাথা নাড়বে এবং বলবেঃ তা আবার কবে? বলুনঃ হবে, সম্ভবতঃ শ্রীঘ্রই (আর বলছে – রাসুল এর দেহ তরতাজা, জিন্দা, রূহ আসে যায়, সালামের জবাব দেন ইত্যাদি)

১৭:৫২> যেদিন তিনি তোমাদেরকে আহবান করবেন, অতঃপর তোমরা তাঁর প্রশংসা করতে করতে চলে আসবে (যেমন আমরা ঘুম থেকে জেগে আল্লাহ্‌র প্রশংসা করি) এবং তোমরা অনুমান করবে যে, সামান্য সময়ই অবস্থান করেছিলে (যেমন আসহাবে কাহফ ৩০৯ বছরের ঘুম, তাদের নিকট এক বেলা) ১৭:৫৩> আমার বান্দাদেরকে বলে দিন, তারা যেন যা উত্তম এমন কথাই বলে শয়তান তাদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধায়নিশ্চয় শয়তান মানুষের প্রকাশ্য শত্রু ( অর্থাৎ মুমেনেরা যেন হায়াতুন্নাবী অর্থে জিন্দা নাবী, রাসুল, নাবী, শহীদ, গাজি, হিজরতকারী বা অন্য কাহাকেও নিয়ে কবর বিষয়ে অজানা কথা বানিয়ে না বলে, কারন কোন কোন ক্ষেত্রে  ধরনা করা পাপ, শয়তানী কর্ম)

এবার আসুন একটু গভীর ভাবে চিন্তা করা যাকঃ

6:98
সুরা আল আনআম ৬;৯৮> তিনিই তোমাদের কে এক ব্যক্তি থেকে সৃষ্টি করেছেনঅনন্তর একটি হচ্ছে তোমাদের স্থায়ী ঠিকানা/ বসস্থান/ সংগ্রহস্থল / এই দুনিয়া (আখেরাতের জন্য উপার্জন স্থল) ও একটি স্থায়ী ঠিকানা /কবর/ পরকাল হচ্ছে গচ্ছিত স্থল নিশ্চয় আমি প্রমাণাদি বিস্তারিত ভাবে বর্ণনা করে দিয়েছি তাদের জন্যে, যারা চিন্তা করে ( এ আয়াতে স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে “ যেমন কর্ম তেমন ফল” অর্থাৎ এ দুনিয়ায় যে যেমন কর্ম করবে, এমন ফসল চাষ করবে, পরকালে সে অনুরুপ ফল পাবে,তেমন ফসল ঘরে তুলবে । এখানে চিন্তাশীল/ ফুকাহা দের চিন্তার খোরাক রয়েছে)।

11:6
১১;৬> আর পৃথিবীতে কোন বিচরণশীল নেই, তবে সবার জীবিকার দায়িত্ব আল্লাহ নিয়েছেন তিনি জানেন তারা কোথায় থাকে/ কি উপার্জন করে দুনিয়ায় এবং কোথায় সমাপিত হয়, শেষ ঠিকানা কোথায়( কোথায় তার কবর অর্থে সুখময় পরিবেশে থাকবে, না-কি কষ্টের পরিবেশে থাকবে) সবকিছুই এক সুবিন্যস্ত কিতাবে রয়েছে
## ঘুম মৃত্যুর অনুরুপ, অর্থাৎ আমরা প্রত্যেক রাত্রে ঘুমের ন্যায় মরনের নিকট পৌঁছে যাই, আল্লাহ্‌ আবার আমাদের জীবন দেন , এভাবেই চলছে , যেন জীবন কাল পূরণ হয় ।তারপর মৃত্যু হয়, কবরের জগতে যেতে হয়। অনেকেই এই কবর সম্বন্ধে বলেন- যারা কটি কটি বছর আগে মারা গেল, আর যারা কিয়ামতের আগে আগে মারা গেল তাদের সুখ বা কষ্ট পরবর্তী দের চেয়ে বেশী হোল না? উত্তর হোল না? কারন ঘুমের অবস্থা, বা অবচেতন অবস্থা, বা কবরে অবস্থানের অবস্থা এবং সময় আল্লাহ্‌র নিকট, যেমন আসহাবে কাহফ এবং ঐ গাধা ওয়ালার কাহিনিতে দেখুন ।

6:60
সুরা আনআম ৬;৬০> তিনিই রাত্রি বেলায় তোমাদের নিদ্রারুপ মৃত্যু ঘটান (ঘুমের মৃত্যু- তখন তোমরা কিছুই জান না, আল্লাহ্‌ জানেন তোমার কি ঘটে) এবং যা কিছু তোমরা দিনের বেলায় কর, তাও তিনি জানেনঅতঃপর তোমাদেরকে দিনে জাগরন করেন যাতে পুরা হয় নির্দিষ্ট কাল,  (জীবন কাল শেষ হয়) অনন্তর তাঁরই দিকে তোমাদের প্রত্যাবর্তন ( মৃত্যু মাধ্যমে ), অতঃপর তোমাদেরকে বলে দিবেন, যা কিছু তোমরা করছিলে (ফয়সালার দিন)
৬:৬১> তিনিই স্বীয় বান্দাদের উপর প্রতাপশালী এবং তিনি প্রেরণ করেন তোমাদের কাছে রক্ষণাবেক্ষণকারী (জীবন রক্ষাকারী ফেরেস্তা)এমন কি, যখন তোমাদের কারও মৃত্যু আসে তখন আমার প্রেরিত ফেরেশতারা তার জীবন/ আত্মা হস্তগত করে নেয়, তারা (জীবন হরণকারী ফেরেস্তা) কোন আলস্য করে না। ৬;৬২> অতঃপর (কবরের পর হাশরে) তাদের সবাইকে সত্যিকার প্রভু আল্লাহর কাছে পৌঁছানো হবেশুনে রাখ,  হুকুম তাঁরই এবং তিনি দ্রুত হিসাব গ্রহণকারী
৩৯:৪৪> বলুন, সমস্ত সুপারিশ আল্লাহরই ক্ষমতাধীন, আসমান ও যমীনে তাঁরই সাম্রাজ্য। অতঃপর তাঁরই কাছে তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে। إِلَيْهِ تُرْجَعُون

???প্রশ্নঃ তাহলে রাসুল সাঃ কবরেই জিন্দা থাকলেন, আল্লাহ্‌র সান্নিদ্ধে এখনও যান নাই ? আর কুরআন বলছে তোমরা বুঝ না, উপলব্ধি করো না
???? কিন্তু কিছু লোক এমন ভাবে বুঝেছে যে তাঁরা তাদের আকিদা বানিয়ে নিয়েছে যে, রাসুল সাঃ মদিনার কবরেই জিন্দা, তরতাজা, সর্বত্র হাজির রুহানী ভাবে- তাহলে আল্লাহু যে হাইয়ুল কাইয়ুম ।

আল্লাহ্‌র রাসুল সাঃ এর বিষয়ে আল্লাহ্‌ কি বলেনঃ
হে পাঠক একটু গভীর মনোযোগ দিয়ে পড়ুন, দেখুন কুরআন কি বলেঃ
 আল্লাহ বলেন হে আমার রাসুল তুমি বলে দাওঃ 
6:162
সুরা আল আনাম ৬;১৬২>6:162 বল, আমার সালাত, আমার কোরবাণী এবং আমার জীবন ও মরন বিশ্ব-প্রতিপালক আল্লাহরই জন্যে

## এই আয়াত পড়ার পর আরও কিছু প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না, কারন একটি আয়াত যখন কোন বিষয়ে স্পষ্ট হয়ে যায় যে রাসুল সাঃ এর জীবন ও মরন বিশ্ব-প্রতিপালক আল্লাহরই জন্যে তখন সারা কুরআন খুজেও এর বিপরীত কোন আয়াত পাবেন না, এটাই ফুরকান, এটাই বুরহান, এটাই নুর, এটাই কুরআন।
3:143
৩;১৪৩> আর তোমরা তো মৃত্যু আসার আগেই মরণ কামনা করতে, কাজেই এখন তো তোমরা তা চোখের সামনে উপস্থিত দেখতে পাচ্ছ
??(অহুদের যুদ্ধক্ষেত্রে যখন মুমিনেরা গিরিপথ ছেড়ে গনিমতের মালামাল কুড়ানতে ব্যস্ত এই ফাকে   যখন মক্কার কাফের-মুশরিকেরা রাসুল সাঃ এর উপর নির্মম নির্যাতন করে মৃত ভেবে ফেলে গেল, তখন তো তোমরা দেখলে যারা তার মৃত্যু আসার আগেই মরণ কামনা করতে,  তোমাদের রাসুল মানুষ বিনে কিছু নয়, কাজেই এখন তো তোমরা তা চোখের সামনে উপস্থিত মৃত্যু দেখতে পাচ্ছ আর এখন তোমরা কি করে তাকে জিন্দা বলছ, রাসুল সাঃ মানুষের মতই জন্ম, মানুষের মতই মরণ, মানুষের মতই দাফন হয়েছে, তার পরও বলছ কবরে জিন্দা, সালামের জবাব দেন ইত্যাদি ইত্যাদি নাম দিয়েছ হায়াতুন্নাবি । হায়াতুন্নাবি অর্থ তো নবীর জীবন, হায়াতুন্নাবি অর্থ নবী জীবিত কিভাবে হয়?)
3:144
৩;১৪৪>  এবং মুহাম্মদ (সাঃ) একজন রাসুল মাত্র / রাসুল বিনে কিছু নয়, তাঁর পূর্বেও বহু রসূল গত হয়ে গেছেনতাহলে সে যদি মৃত্যুবরণ করে অথবা নিহত হ, তবে কি তোমরা পশ্চাদপসরণ করবে / মানে মানে কেটে পরবে ? বস্তুতঃ কেউ যদি পশ্চাদপসরণ করে , তবে তাতে আল্লাহর কিছুই ক্ষতি-বৃদ্ধি হবে নাআর যারা কৃতজ্ঞ, আল্লাহ তাদের সওয়াব দান করবেন

উল্টো পায়ে হাটা (walk on hill) : কোন স্থানে কোন লোক সমাজে যোগ দিয়ে, তাদের সাথে চলতে চলতে কোন কারনে চুপি চুপি কেটে পড়া। এখানে দ্বীন ইসলামে যোগ দিয়ে যারা মুসলিম সমাজে মুহাম্মাদ সাঃ এর সাথে চলছে, শত্রু দের সাথে বিজয় লাভ করছে, আবার এটাও ভাবছে যে, মুহাম্মাদ সাঃ এর মৃত্যুর পর ভয় আছে, অবস্থা পাল্টে যাবে, তখন অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নিব । এই অবস্থায় আল্লাহ্‌ মুমিনদের সতর্ক বার্তা দিচ্ছেন এভাবে “মুহাম্মাদ (সাঃ) যদি মৃত্যুবরণ করে অথবা নিহত হ, তবে কি তোমরা উল্টোপায়ে ফিরেযাবে ?
???হে পাঠক দেখুন আল্লাহ্‌ যা বলেছেন তাই অনেকের হয়েছে, কেহ মুনাফিক হয়েছে, কেউ পূর্বের ধর্মে ফিরে গেছে, এখনও অনেকে রাসুল সাঃ এর কথা ও কাজ কে এমন ভাবে বিক্রি করছে যা কুরআনেই নাই । যেমন এই আয়াতে বলছে মানুষের মত মানুষ, মানুষের মত মরন । যদি কবরে জিন্দাই থাকবে, আশেকের জন্য হাত বের করে দেবে, তবে যারা উল্টে গেল, যারা জাল/ নকল হাদিস বানাচ্ছে তাদের তো কিছুই হচ্ছে না, জিন্দা রাসুল কিছুই করছে না কেন? এখন মুস্লিমদের উপর এত জুলুম, উনি বের হচ্ছেন না কেন? ঐ কবরের পাশেই সালাতরত অবস্থায় খলিফা ওমর রাঃ কে খুন করা হল, রাসুল সাঃ কিছুই করলেন না, কাহাকেও স্বপ্নেও দেখালেন না ? আদরের হোসেন কে মদিনা থেকে বের হতে দিলেন কেন?বের না হলে তো আর কারবালায় এত রক্তপান হত না?  এরকম হাজার হাজার কথা আছে। কিন্তু এই বুঝ কি আমাদের নেই যে কবরে মৃতদের কেই রাখা হয়, জীবিত দের নয় ।

21:34
সুরা আনকাবুত ২১:৩৪> আপনার পূর্বেও কোন মানুষকে আমি অনন্ত জীবন দান করিনিসুতরাং আপনার মৃত্যু হলে তারা কি চিরঞ্জীব হবে?
(এরপরও আল্লাহ্‌ বুঝাতে চাচ্ছেন যে, সব নাবীই মানুষ, সবাই মানুষ সমাজেই পিতা মাতার ঘরেই জন্ম, তারপরও আল্লাহ্‌ ইমান্দারদের ঈমান পরীক্ষার জন্য ফেতনা করে পাঠালেন পিতাহীন মানুষ নাবী মারিয়াম পুত্র ঈসা আঃ কে, আবার তাকে জিবন্ত উঠিয়ে নিলেন, আবার পাঠাবেন যখন ইচ্ছা করবেন, তখন বাকী জিবনকাল পুরা করবেন, তারপর মৃত্যুকে বরন করবেন, কেহই চিরঞ্জীব নহে, আল্লাহই আদি ও অনন্ত)

39:30
সুরা আল জুমার>৩৯:৩০> নিশ্চয় তোমারও (মুহাম্মাদ সাঃ) মৃত্যু হবে এবং তাদেরও মৃত্যু হবে
৩৯:৩১> অতঃপর কেয়ামতের দিন তোমরা সবাই তোমাদের পালনকর্তার সামনে কথা কাটাকাটি করবে।
(অর্থাৎ  রাসুল জিন্দা, বা মৃত নন , চিরঞ্জীব বা চিরহায়াত বাঃ হায়াতুন্নাবী, , রাসুল হাজির – নাজির এসব বিষয়ের ফয়সালা করবেন)
আল্লাহ্‌ বলেনঃ
55:26
৫৫:২৬> ভূপৃষ্টের সবকিছুই ধ্বংসশীল/ নশ্বর


৫৫:২৭> অবিনশ্বর কেবল তোমার রব্বের সত্তা, মহামহিম ও সন্মানিত

প্রশ্নঃ আল্লাহ ছাড়া সবই ধ্বংসশীল/ নশ্বর হলে, রাসুল সাঃ এর দেহ নশ্বর নয় ?

29:57
সুরা আনকাবুত ২৯:৫৭> জীবমাত্রই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবেঅতঃপর তোমরা আমারই কাছে প্রত্যাবর্তিত হবে
৩:১৮৫> প্রত্যেক প্রাণীকে আস্বাদন করতে হবে মৃত্যু। আর তোমরা কিয়ামতের দিন পরিপূর্ণ বদলা প্রাপ্ত হবে। তারপর যাকে দোযখ থেকে দূরে রাখা হবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে, তার কার্যসিদ্ধি ঘটবে। আর পার্থিব জীবন ধোঁকা ছাড়া অন্য কোন সম্পদ নয়।

কি আজব মিথ্যাচার ?

মাটি দেহ খাবে না? পোকা – কীট খাবে না? এসব কথা কি রাসুল সাঃ বলেছেন?  এ ধরনের কথা কি রাসুল সাঃ কুরআনের বাইরে বলেছেন? সেটা আবার কোন কুরআন ?এর পরও বলছে, হাদিসে আছে, অনেক নজীর আছে, অমুক দেখেছে, স্বপ্নে দেখেছে, হায়রে মানুষ, প্রিয় পাঠক আমার- এতক্ষন হোল কি কুরআনের কথা গুলো নিজের ভাষায় পড়েন নাই, বুঝেন নাই? এবার নিজে উল্লেখিত আয়াত গুলোর পুর্বপর ভাল করে পড়ুন । দুনিয়ার প্রয়োজনে কত ভাষা শিখেন, আর নিজের আকিদা কে মুজবুত করার জন্য সত্য অনুসন্ধানে কুরআনের ভাষা কেন শিখেন না, কি জবাব দিবেন? বলবেন অমুক মুফতি বলেছিল, অমুক উলামা বলছিল, তখন এসব ঝগড়া করে লাভ হবে কি ?

আল্লাহ্‌ বলেনঃ
৬৯:১৩>  যখন শিংগায় ফুৎকার দেয়া হবে-একটি মাত্র ফুৎকার (প্রথম বার) ৬৯:১৪> এবং পৃথিবী ও পর্বতমালা উত্তোলিত হবে ও চুর্ণ-বিচুর্ণ করে দেয়া হবে, ( তাহলে রাসুল অলি আম্বীয়া এদের দেহ কি থাকলো ?)

মুলতঃ তখনকার কাফেরেরা বাস্তব চিন্তা করতঃ এবং এখনকার নব্য নাস্তিকেরাও একই রকম চিন্তা করে, ওরা বলে-
৩৭:৫৩>আমরা যখন মরে যাব এবং মাটি ও হাড়ে পরিণত হব, তখনও কি আমরা প্রতিফল প্রাপ্ত হব?
অর্থাৎ আমরা মরে যাব, দেহ মাটির সাথে মিশে যাবে, এক সময় ধুলা হয়ে উড়ে যাবে, তখন আবার কিসের হিসাব, কিছুই তো থাকলো না ।
কাফেরদের এসব চিন্তা বা ধারনা আজ মুসলিম কেও হার মানায়। কারন কিছু মুসলিম সন্তানেরা বলে নাবীর দেহ পচে না, দেহে রূহ আসে, আবার রূহ চলে যায়, ফেরেস্তা নিয়োজিত আছে, আর এ সব-ই হচ্ছে কবরের মধ্যে । এসব কথা কুরআনের কোথাও যদি আল্লাহ্‌ একটি আয়াতও দিতেন তাহলে বিশ্বাস করা যেত।

(যারা বলে রাসুল মদিনার কবরে তরতাজা আছে, তাদের কাছে কি এই বিশ্বাস টুকু নেই, মরণ ছাড়া, মৃত্যুর স্বাদ গ্রহন করা ছাড়া কেহ আল্লাহ্‌র নিকট ফিরবে না, আল্লাহ্‌র সাক্ষাৎ সবাই  পাবেও না। তাহলে রাসুল সাঃ নিজের মদিনার ঘরের কবরেই রয়ে গেলেন, জিন্দা ? আল্লাহ্‌র পছন্দের স্থানে যান নাই /আল্লাহ্‌র নিকট ফি্রেন নাই?)

বিষয়টি শুধু কিছু ইসলাম ধর্মের লোকদেরকেই ভ্রান্ত পথে নিচ্ছে না, নাছারা ধর্মের লোকেরাও তাদের রাসুল কে অতি মানব বলতে বলতে আল্লাহ্‌র সন্তান বানিয়ে নিয়েছে, যেমনঃ
৫:৭৫> মরিয়ম-তনয় মসীহ রসূল ছাড়া আর কিছু নন। তাঁর পূর্বে অনেক রসূল অতিক্রান্ত হয়েছেন আর তার জননী একজন সিদ্দিকা / সত্যবাদিনী তাঁরা উভয়েই খাদ্য ভক্ষণ করতেন। দেখুন, আমি তাদের জন্যে কিরূপ যুক্তি-প্রমাণ বর্ননা করি, আবার দেখুন, তারা উল্টা কোন দিকে যাচেছ।

তেমনীঃ হায়াতুননবী – হাজির নাজির সর্বত্র হাজির হয় ইত্যাদি কাহিনী বলে কসম কেটে মানুষ কে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে, শির্ক এর প্রশিক্ষন দিচ্ছে, তাই নয় কি ?                 
বিরতি–৩

এখন যে বিষয়টির উপর উদ্ধৃতি করা হচ্ছে
তা একটু গভীর মনোযোগ দিয়ে দেখিঃ

# সবাই মৃত্যু বরন করছে, করস্থ হচ্ছে যে কন ভাবে কিন্তু সবাই আল্লাহ্‌র নিকট ফিরে যাচ্ছে ইচ্ছায় হোক আর অনিচ্ছায় হোক, ফেরেস্তাগন রুহ নিয়ে যাচ্ছে, আমরা তাকে মৃত্যু বলছি ।এই মৃতদেরকে আমরা কবরে দাফন করি, এভাবেই চলছে, কাবিল থেকে আজ পর্যন্ত । এভাবে চলতে চলতে একদিন এই দুনিয়া ধ্বংস হয়ে যাবে, সাগর, আকাশ, পাহাড়, এমনকি এই মাটি তার ভিতরের সব বের করে দিবে, সে কিয়ামতের দিনের পর আবার এক নতুন পৃথিবী হবে।
৩৯:৬৯> বিশ্ব উদ্ভাসিত হবে রব্বের জ্যোতিতে / নুরে ।

তাহলে কবরের কি হল ? দুনিয়াই তো থাকল না । আবার আল্লাহ্‌ বলছেন, এর পর সবাইকে কবর থেকে উঠাবেন। বিষয় টি কেমন কেমন হল না?
হ্যাঁ, মৃতরাই কবরে থাকে । দুনিয়া ধ্বংস হওয়ার পর হাশরের মাঠে যে কবর থেকে সবাই বের হবে । তার মানে আমরা যে কবরে দাফন করি এটা কি সেই কবর ? তাহলে এই কবর কেমন? আমরা যে কবরে দাফন করি ? হয়ত এতক্ষনে বুঝতে পেরেছেন – যে  
এটা আমাদের নিকট কবর কিন্ত আল্লাহ্‌র নিকট এই কবর এমন যা দেখা যায় না, আমরা বুঝতে পারি না, আমদের সেই জ্ঞ্যান নেই, যা উন্মুক্ত করা হবে কিয়ামতের পর। সবাই যে কবর থেকে বের হয়ে আসবে ।
এই মাটি খুঁড়ে আমরা যে কবর তৈরি করি সেই কবরে এক বছর পর আবার নতুন লাশ কবর দেয়া হয় । অনেক সময় অনেক এলাকায় অনেক আশ্চর্য / আজব কিছু ঘটনা ঘটে- যেমনঃ লাশ অবিকৃত থাকে, অথবা মমির মত হয়ে থাকে, অথবা কাফনের কাপড় সহ দেহটি হাড় বা কঙ্কাল হয়ে আছে ।এ অবস্থা সম্পর্কে আল্লাহ্‌ বলেনঃ

১৭:৪৯> তারা বলেঃ যখন আমরা অস্থিতে পরিণত ও চূর্ণ বিচূর্ণ হয়ে গেলেও কি নব সৃষ্টিতে পুনরুত্থিত হব?
এর জবাবে আল্লাহ্‌ বলে হে নবী তুমি বলে দাওঃ
১৭:৫০> বল, তোমরা পাথর হয়ে যাও কিংবা লোহা
১৭:৫১> অথবা এমন কোন বস্তু, যা তোমাদের ধারণায় খুবই কঠিন/ বা ধারনার বাইরে ; তথাপি তারা বলবেঃ আমাদের কে পুর্নবার কে সৃষ্টি করবে লঃ যিনি তোমাদেরকে প্রথমবার সৃজন করেছেনঅতঃপর তারা তোমাদের সামনে মাথা নাড়বে এবং বলবেঃ এটা কবে হবে? লঃ হবে, সম্ভবতঃ শ্রীঘ্রই
 অর্থাৎ দেহের যাহাই হোক, যেখানে যে অবস্থাতেই থাকুন, অবিকৃত বা নিশ্চিহ্ন বা ধারনার বাইরে অন্য কিছু তবুও আল্লাহ্‌ নতুন রুপে সৃষ্টি করবেন । আর কিয়ামতে কোন কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না এক মাত্র আল্লাহ্‌ ছাড়া ।


আমাদের নিকট মৃত কিন্তু আল্লাহ্‌র নিকট জীবিত

#দেহ থেকে রুহ বের হয়ে গেলে আমরা তাকে মৃত বলি কন্তু যারা হিজরত করে,আল্লাহ্‌র রাস্তায় নিহত হয় তাদেরকে আল্লাহ্‌ মৃত বলতে নিষেধ করেছেন ।
2:154
সুরা বাকারা ২:১৫৪> আর যারা আল্লাহর রাস্তায় নিহত/কতল হয়, তাদের মৃত বলো নাবরং তারা জীবিত, কিন্তু তোমরা তা বুঝ-ই  না/ তোমাদের সেই উপলব্ধি-ই  নেই , সেই বুঝ-ই নেই।
(নিশ্চয় আল্লাহ্‌ এদের সন্মন্ধে বিস্তারিত কি বলেছেন তার কালামে, চলুন খুজে দেখিঃ এখানে শুধু বাংলা অনুবাদ দেখানো হল , আপনারা অবশ্যই আরবি পড়ে , নিজেরা নিজেদের মত অনুধাবন করবেন, বুঝবেন । কারন, আল্লাহ্‌ বলেছেন وَلَٰكِن لَّا تَشْعُرُونَ তোমরা বুঝ না এর অর্থ হল একটু বুঝতে চেস্টা কর না , যারা আল্লাহ্‌র রাস্তায় হিজরত, নিহত, আহত বা গাজি , নির্যাতিত, নির্যাতনের জুলুমের প্রতিশোধ নিতে গিয়ে ধৃত বা নিহত তাদের আল্লাহ্‌ কোথায় রেখেছেন )
সুরা আল ইমরানঃ ৩;১৫৬> হে ঈমাণদারগণ! তোমরা তাদের মত হয়ো না, যারা কাফের হয়েছে এবং নিজেদের ভাই বন্ধুরা যখন কোন অভিযানে বের হয় কিংবা জেহাদে যায়, তখন তাদের সম্পর্কে বলে, তারা যদি আমাদের সাথে থাকতো, তাহলে মরতোও না আহতও হতো নাযাতে তারা এ ধারণা সৃষ্টির মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের মনে অনুতাপ সৃষ্টি করতে পারেঅথচ আল্লাহই জীবন দান করেন এবং মৃত্যু দান করেনতোমাদের সমস্ত কাজই, তোমরা যা কিছুই কর না কেন, আল্লাহ সবকিছুই দেখেন
## রাসুল সাঃ রুহানী ভাবে হাজির হয়ে সব দেখেন বললে শির্ক হবে।

৩;১৫৭>> আর তোমরা যদি আল্লাহর পথে নিহত হও কিংবা মৃত্যুবরণ কর, তোমরা যা কিছু সংগ্রহ করে থাক আল্লাহ তাআলার ক্ষমা ও করুণা সে সবকিছুর চেয়ে উত্তম
৩;১৫৮> আর তোমরা মৃত্যুই বরণ কর অথবা নিহতই হও, অবশ্য আল্লাহ তাআলার সামনেই সমবেত হবে(হাশরের মাঠে)
৩:১৬৮> ওরা হলো যে সব লোক, যারা বসে থেকে নিজেদের ভাইদের সম্বদ্ধে বলে, যদি তারা আমাদের কথা শুনত, তবে নিহত হত নাতাদেরকে বলে দিন, এবার তোমাদের নিজেদের উপর থেকে মৃত্যুকে সরিয়ে দাও, যদি তোমরা সত্যবাদী হয়ে থাক(মরনের হাত থেকে বাঁচতে পারলে বাঁচ)
3:169


৩:১৬৯>>> আর যারা আল্লাহর রাহে নিহত হয়, তাদেরকে তুমি কখনো মৃত মনে করো নাবরং তারা নিজেদের পালনকর্তার নিকট জীবিত ও জীবিকাপ্রাপ্ত
 3:170

৩:১৭০>>> আল্লাহ নিজের অনুগ্রহ থেকে যা দান করেছেন তার প্রেক্ষিতে তারা আনন্দ উদযাপন করছেআর যারা এখনও তাদের কাছে এসে পৌঁছেনি তাদের পেছনে তাদের জন্যে আনন্দ প্রকাশ করেকারণ, তাদের কোন ভয় ভীতিও নেই এবং কোন চিন্তা ভাবনাও নেই
৩:১৭১>> আল্লাহর নেয়ামত ও অনুগ্রহের জন্যে তারা আনন্দ প্রকাশ করে এবং তা এভাবে যে, আল্লাহ, ঈমানদারদের শ্রমফল বিনষ্ট করেন না

৩:১৯৫>>> অতঃপর তাদের পালনকর্তা তাদের দোয়া (এই বলে) কবুল করে নিলেন যে, আমি তোমাদের কোন পরিশ্রমকারীর পরিশ্রমই বিনষ্ট করি না, তা সে পুরুষ হোক কিংবা স্ত্রীলোকতোমরা পরস্পর একতারপর সে সমস্ত লোক যারা হিজরত করেছে, তাদেরকে নিজেদের দেশ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে এবং তাদের প্রতি উৎপীড়ন করা হয়েছে আমার পথে এবং যারা লড়াই করেছে ও মৃত্যুবরণ করেছে, অবশ্যই আমি তাদের উপর থেকে অকল্যাণকে অপসারিত করবএবং তাদেরকে প্রবিষ্ট করব জান্নাতে যার তলদেশে নহর সমূহ প্রবাহিতএই হলো বিনিময় আল্লাহর পক্ষ থেকেআর আল্লাহর নিকট রয়েছে উত্তম বিনিময়
৪:৭৪>>> কাজেই আল্লাহর কাছে যারা পার্থিব জীবনকে আখেরাতের পরিবর্তে বিক্রি করে দেয় তাদের লড়াই করাই কর্তব্যবস্তুতঃ যারা আল্লাহর রাহে লড়াই করে এবং অতঃপর মৃত্যুবরণ করে (শহীদ হয় ) কিংবা বিজয় অর্জন করে/ হয় গাজী, আমি তাদেরকে মহাপুণ্য দান করব

শহীদগন
সুরা আল ইমরান ৩:১৪০> তোমরা যদি আহত হয়ে থাক, তবে তারাও তো তেমনি আহত হয়েছে। আর এ দিনগুলোকে আমি মানুষের মধ্যে পালাক্রমে আবর্তন ঘটিয়ে থাকি। এভাবে আল্লাহ জানতে চান কারা ঈমানদার আর তিনি তোমাদের কিছু লোককে শহীদ/ সাক্ষী হিসাবে গ্রহণ করতে চান। আর আল্লাহ অত্যাচারীদেরকে ভালবাসেন না।
সুরা নিসা ৪:৬৯> আর যে কেউ আল্লাহর হুকুম এবং তাঁর রসূলের হুকুম মান্য করবে, তাহলে যাঁদের প্রতি আল্লাহ নেয়ামত দান করেছেন, সে তাঁদের সঙ্গী হবে। তাঁরা হলেন নবীগন, ছিদ্দীকগন, শহীদগন ও সৎকর্মশীল ব্যক্তিবর্গ। আর তাদের সান্নিধ্যই হল উত্তম।
সুরা হাদিদ ৫৭:১৯> আর যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলগনের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে তারাই তাদের পালনকর্তার কাছে সিদ্দীক ও শহীদ বলে বিবেচিত। তাদের জন্যে রয়েছে পুরস্কার ও জ্যোতি এবং যারা কাফের ও আমার নিদর্শন অস্বীকারকারী তারাই জাহান্নামের অধিবাসী হবে।

# সুরা হজ্জ ২২ নং সুরা পুরুটাই লাইন এর পর , শব্দে শব্দে পড়ুন, পড়তে থাকুন, ৫১ নং আয়াত থেকে বেশী মনোযোগ দেন , এবার এখানে ৫৮ নং আয়াত দেখুনঃ

২২:৫৮> যারা আল্লাহর পথে গৃহ ত্যাগ/ হিজরত করেছে,  অতঃপর (ছুম্মা) নিহত হয়েছে অথবা মরে গেছে; আল্লাহ তাদেরকে অবশ্যই উৎকৃষ্ট জীবিকা দান করবেন এবং আল্লাহ সর্বোৎকৃষ্ট রিযিক দাতা

২২:৫৯> তাদেরকে অবশ্যই এমন এক স্থানে পৌছাবেন, যাকে তারা পছন্দ করবে এবং আল্লাহ জ্ঞানময়, সহনশীল

(অর্থাৎ আল্লাহ্‌ এদেরকে এমন স্থানে রাখবেন যা তারা আনন্দের সাথে পছন্দ করবে )

তাহলে এসব হিজরতকারীগণ, নবী রাসুল গন, শহিদ-গাজিগন এদের অবস্থান কোথায়, কেমন?
বারযাখ ( গায়েবি বা আমাদের নিকট অদৃশ্য বাঁধা)

55:19 
৫৫:১৯> তিনি পাশাপাশি দুই দরিয়া প্রবাহিত করেছেন
55:20
৫৫:২০>উভয়ের মাঝখানে রয়েছে এক অন্তরাল (বারযাখুন), যা এক সাগর অন্য সাগর কে অতিক্রম করে না
দুটি সাগরের একটিতে মিঠাপানি  এবং অন্যটিতে লবণাক্তপানি  পাশাপাশি  প্রবাহিত হচ্ছে কিন্ত একটির পানি অন্যটির পানির সাথে মিলছে না । কারণ  উভয়ের  মাঝে  আল্লাহ  এমন  একটি  বাধা  বা  পর্দা বা  বারযা স্থাপন করে দিয়েছেন যা পৃথিবীর কোন বিজ্ঞানি আজও আবিষ্কার করতে পারেনি , সবাই চুপ মেরে আছে

55:21
অথচ আল্লাহ্‌ বলছেন ৫৫:২১> নং আয়াতে (জীন ও ইনসান ) জ্ঞানীদের উদ্দেশ্য করে বলছেন এটা তোমার সৃষ্টি কর্তার কাজ , কি করে তার দান কে অস্বীকার করবে ?
55:22
৫৫:২২> উভয় দরিয়া থেকে উৎপন্ন হয় মোতি ও প্রবাল
সুরা ফাতির ৩৫:১২> দুটি সমুদ্র সমপর্যায়ভুক্ত নহে, একটির পানি মিঠা ও তৃষ্ণানিবারক, সুপেয় এবং অপরটি পানি লোনা, বিস্বাদ অধিকন্ত ঊভয়টি থেকেই তোমরা তাজা গোশত (মৎস) আহার কর এবং পরিধানে ব্যবহার্য গয়নাগাটি/ রত্নাবলী আহরণ কর। তুমি তাতে তার বুক চিরে জাহাজ চলতে দেখ, যাতে তোমরা তার অনুগ্রহ অন্বেষণ কর এবং যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর।

একটু চিন্তা করলেই বিষয়টি এই পানির উদাহরনের পানির মতই সহজ হয়ে যাবে । আল্লাহ্‌ বলেনঃ
** এই মাটি থেকেই তোমাদের জন্ম, এই মাটিতেই দাফন বা কবর আবার এই মাটি থেকেই তোমাদের বের করা হবে।** ৩:১৬৯ আয়াতে বলা হচ্ছে > আর যারা আল্লাহর রাহে নিহত হয়, তাদেরকে তুমি কখনো মৃত মনে করো নাবরং তারা নিজেদের পালনকর্তার নিকট জীবিত ও জীবিকাপ্রাপ্ত
** দেখুন এই মাটিতেই যাঁদের কবরস্থ করলেন তারা আমাদের নিকট মৃত তাই তো মাটিতে ঢেকে দিলাম- আর আমরা দুনিয়ার বুকে সেই মাটিতেই চলাফেরা করছি, খাওয়া দাওয়া করছি একই ভাবে আল্লাহর নিকট কেহ ঐ কবরেই এমন স্থানে পৌঁছে গেছে, রিজিক প্রাপ্ত হচ্ছে, মহা আনন্দে আছে আবার কেহ মহা কষ্টে জাহান্নামের আজাবের পরিবেশে আছে ।

** তাহলে ঐ দুই সাগরের মত আমরা পাশাপাশি চলছি কিন্তু কেউ কারো সাথে মিশতে পারছি না।

** কবরে জাহান্নামের পরিবেশ ও জান্নাতের পরিবেশ বিরাজমান, কাহাকেও জাহান্নামের পরিবেশ ভয় দেখানো হবে, কাহাকেও জান্নাতের  পরিবেশ এবং আনন্দে রাখা হবে ।
23:99
২৩:৯৯> যখন তাদের কারও কাছে মৃত্যু আসে, তখন সে বলেঃ হে আমার পালণকর্তা! আমাকে পুনরায় (দুনিয়াতে ) প্রেরণ করুন
23:100
২৩:১০০> যাতে আমি সৎকর্ম করতে পারি, যা আমি আগে করিনিকখনই নয়, এ তো তার একটি কথার কথা মাত্রএখন তাদের সন্মুখে পর্দা (বারযাখ) থাকিবে পুনরুত্থান দিবস পর্যন্ত ( এটাই কবরের জীবন )

## ২৩:৯৯}মৃত্যুর ফেরেস্তা দেখা মাত্রই তার কুফরি, চালাকী, শয়তানী, শিরেকী সবই মিথ্যা রুপে বিলীন হবে। সত্য (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ) যা সে গোপন করত তা বুঝতে পারবে এবং আকুতি মিনতি করবে ফিরতে চাইবে সঠিক পথে , সে বলবে, হে আমার পালণকর্তা! আমাকে পুনরায় (দুনিয়াতে ) প্রেরণ করুন (দেখুন সে কিন্তু দুনিয়াতেই আছে আমরা দেখছি, আমদের সামনেই এই সব হচ্ছে কিন্তু আমরা বুঝতে পারছি না । আর মৃত্যু পথযাত্রি ব্যাক্তি আমদের অর্থাৎ ছেলেমেয়ে, বিবি , বন্ধু কাহাকেও দেখছে না। সে দেখছে ফেরেস্তাকে, সে দেখছে জাহান্নামের আলামত ।।(যেমনটি ফেরাউন বলেছিল ডুবতে ডুবতে আমি মুছা ও হারুন এর রব্বের প্রতি ঈমান আনলাম)কিন্তু মরন কালের তৌবা করে আর শেষ রক্ষা হবে না ।২৩:১০০}} {সে বলবে, হে আমার পালণকর্তা! আমাকে পুনরায় (দুনিয়াতে ) প্রেরণ করুন} যাতে আমি সৎকর্ম করতে পারি, যা আমি আগে করিনিতখন আল্লাহ্‌ বলবেন আমার জীবন হরণকারী ফেরস্তাগন কক্ষনই তা শুনবে না, কারন -  এ তো তার একটি কথার কথা মাত্রএখন তাদের সন্মুখে পর্দা (বারযাখ) থাকিবে পুনরুত্থান দিবস পর্যন্ত

অর্থাৎ মৃত্যু কে বরন করে মরন হয়, মাটিতে দাফন হোক বা  না হোক, মৃত্যুর সাথে সাথেই  আমরা পৌঁছে যাই কবরের জগতে, কবরের বাসিন্দা হয়ে যাই, যা আছে আল্লাহ্‌র নিকট, যে জ্ঞ্যান আমাদের নাই, আমাদের সেই বুঝ শক্তি নাই ।
দাফন করা আমদের ধর্মীয় কাজ, যারা আল্লাহ্‌ কে মানেই না- তাদের রাষ্ট্রীয় বা সামাজিক কাজ। দাফন না করলে এটি রাখবেন কোথায়? পানিতে ডুবিয়ে বা ভাসিয়ে দেবেন? পুড়িয়ে ফেলবেন? মমি করে শুটকি বানিয়ে রাখবেন, না কি অন্য? যেমনঃ আল্লাহ্‌ ফেরাউনের লাশ কে সংরক্ষন করেছেন।

এবার দেখা যাক পাপী জুলুমবাজ দের কবরের অবস্থা কেমন?
ফেরাউনের মৃত দেহ এবং কবর
(যে নিজেকে সবচেয়ে বড় রব্ব মানতে মানুষদের বাধ্য করত)

১০:৯২> অতএব আজ তোমার দেহকে بِبَدَنِكَ/ ধড়/ বদন/ শরীর (ফেরাউনের দেহকে) কে তোমার উত্তরসূরিদের নিদর্শন হিসাবে চর জমিতে আমি সংরক্ষন করিব, নিঃসন্দেহে মানুষের অনেকেই আমার নিদর্শন হতে গাফেল / আমার মহাশক্তির প্রতি লক্ষ্য করে না
(যারা এখনো আল্লাহ্‌র সাথে শরীক করছে, যা খুশী যেমন আকিদা পোষণ করছে, সেই মতে আমল করছে, যা রাসুল সাঃ বলেন নাই, কুরআনেও নাই, সবই উলামাগনের অভিমত)

দেখুন, ফেরাউনের লাশ দুনিয়ার উপরে কিন্তু তাঁকে প্রত্যেক দিন তার দলবল সহ আগুনের ধারে নেয়া হচ্ছে- তাদেরকে চরম আতঙ্কে রাখা হয়েছে।

৪০:৪৬> সকালে ও সন্ধ্যায় তাদেরকে (ফেরাউন ও তার সাথে যারা ডুবেছিল) আগুনের সামনে পেশ করা হয় এবং যেদিন কেয়ামত সংঘটিত হবে, সেদিন আদেশ করা হবে, ফেরাউন গোত্রকে কঠিনতর আযাবে দাখিল কর। (তাহলে দেখুন ফেরাউনের দেহ দুনিয়ার জাদুঘরে সংরক্ষিত কিন্ত তার কবরের আজাব চালু আছে, কিয়ামতের পর জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে ।)

** এটাই দুনিয়ার জগত ও ওপাশের কবরের জগত , দুটি জগতই পাশাপাশি চলছে , মাঝে আছে বারযাখ । যে বারযাখ অতিক্রম ক্ষমতা এমনকি দেখার ক্ষমতা কারো নেই। যেমন দুই সাগরের মাঝের অবিচ্ছেদ্দ বাঁধা / পর্দা যা দেখা যায় না , অথচ ঐ দুই সাগরের মিলনস্থলের উপর দিয়ে জাহাজ বয়ে যাচ্ছে ।


তাহলে সলাতুল জানাজা, কবরবাসিদের জন্য দোয়া, দান, সদকা এগুলো কিঃ

সুরা তাওবাহ> ৯:৮৪> ( হে নাবী) আর তাদের (মুনাফেক/ কাফের) মধ্য থেকে কারো মৃত্যু হলে তার উপর কখনও সলাত পড়বেন না (যানাজার সলাতে যাবেন না) এবং তার কবরে কখনও দাঁড়াবেন না (সলাত/ দোয়ার জন্য)। তারা তো আল্লাহর প্রতি অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করেছে এবং রসূলের প্রতিও আর মৃত্যু বরণ করেছে ফাসেক অবস্থায়
অর্থাৎ আমারা মুমিন-মুসলিম মৃতদের জন্য আল্লাহ্‌র নিকট দোয়া করতে পারব, মাইয়াতের উপর যেমন সলাতুল যানাজা পড়া হয় তেমনি মুসলিমদের কবরের পাশে দাড়িয়ে দোয়া করা যাবে, কিন্তু মুনাফেক/ কাফের দের মৃতের উপর বা কবরে দোয়া করা যাবে না ।
৮৯:১৭> এটা অমূলক, বরং তোমরা এতীমকে সম্মান কর না।৮৯:১৮>এবং মিসকীনকে অন্নদানে পরস্পরকে উৎসাহিত কর না।৮৯:১৯>এবং তোমরা মৃতের ত্যাজ্য সম্পত্তি সম্পূর্ণরূপে কুক্ষিগত করে ফেল । ৮৯:২০> এবং তোমরা ধন-সম্পদকে প্রাণভরে ভালবাস।
তোমরা মৃতের ত্যাজ্য সম্পত্তি সম্পূর্ণরূপে কুক্ষিগত করে ফেল – এর অর্থ কি? অর্থ হচ্ছে- যারা আমাদের জন্য বাড়ি, গাড়ি, সম্পত্তি ছেড়ে কবরের জগতে চলে গেছে তাদের কথা কি ভুলে গেছো? তাদের নামে তাদের জন্য আল্লাহ্‌র কাছে তাদের রেখে যাওয়া সম্পত্তি ( তুমিও তো তার ছেলে বা মেয়ে – এখন কত কিছু করছো, তোমরা ধন-সম্পদকে প্রাণভরে লালন করছ) থেকে এতিমের জন্য কিছু করো না, মিস্কিন কে খাওয়াও না, সম্পদ থেকে দান করো না। অর্থাৎ এগুলোর দ্বারা আল্লাহ্‌ তাদের উপর সন্তুষ্টি বা রাহমাত দান করবেন, বুঝা যায় ।
আরেকটি আয়াত দেখুনঃ
৫৭:৭> তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর এবং তিনি তোমাদেরকে যার উত্তরাধিকারী করেছেন, তা থেকে ব্যয় কর। অতএব, তোমাদের মধ্যে যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও ব্যয় করে, তাদের জন্যে রয়েছে মহাপুরস্কার।
দেখুন এ আয়াতটি ৮৯:১৯ আয়াত এর পরিস্কার বিশ্লেষণ যে, তোমারা যাদের উত্তরাধিকারী হয়েছো, যে সম্পদ পেয়েছো তা থেকে ব্যয় কর, এছাড়াও তোমাদের যারা ইমান্দার তারা তো এমনিতেই ব্যয় কর, নিজের জন্য, মৃত পিতা মাতার জন্য, এজন্যই তোমাদের জন্য রয়েছে মহাপুরস্কার।

জরুরী সতর্ক বার্তাঃ
যে সব ভাইয়েরা আল্লাহর কিতাবে কবরের আজাব বা আজাব আল খুজে পান না, আশা করি তাদের নিকটও বিষয়টি ফেরাউনের ঘটনার বর্ণনায় স্পষ্ট হয়েছে।

আল্লাহ্‌ যখন চাইবেন, কিয়ামতের পর এই পৃথিবী নতুন পৃথিবী হবে
** কবরবাসীদের কবর থেকে উঠবেন, যাদেরকে যে অবস্থায় রেখেছিলেন, কাহাকেও আল্লাহ্‌ তার পছন্দের স্থানে রেখেছিলেন, সেখান থেকে বিচারের মাঠে নিয়ে আসবেন সবাইকে ।

আশা করি বিষয়টি পরিস্কার হয়েছে। পরিশেষেঃ একটি আয়াতের কথা মনে পড়েগেল, তা হলঃ আমাদের এ প্রিথিবী চুর্ন বিচুর্ন হয়ে শেষ হয়ে যাবে, এ পৃথিবী এক নতুন পৃথিবী হবে, আল্লাহ্‌র জ্যতিতে পৃথিবী উদ্ভাসিত হবে...
মুলত সবাই কবরের জগতে সুখে বা দুখে থাকবে, কিয়মত হয়ে যাবে, নতুন পৃথিবী হবে, আবার সিংগাতে ফুঁৎকার দেয়া হবে, যা অবশিষ্ট ছিল তাতে রূহ মিলানোও হবে, সবাই কবর থেকে উঠবে, হাজির হবে রাব্বুল আল-আমিন এর সামনে।

৮৯:২২> এবং আপনার পালনকর্তা ও ফেরেশতাগণ সারিবদ্ধভাবে উপস্থিত হবেন ।৮৯:২৩>এবং সেদিন জাহান্নামকে আনা হবে, সেদিন মানুষ স্মরণ করবে, কিন্তু এই স্মরণ তার কি কাজে আসবে? ৮৯:২৪> সে বলবেঃ হায়, এ জীবনের জন্যে আমি যদি কিছু অগ্রে প্রেরণ করতাম! ৮৯:২৫> সেদিন তার শাস্তির মত শাস্তি কেউ দিবে না।
৮৯:২৬>এবং তার বন্ধনের মত বন্ধন কেউ দিবে না।
৮৯:২৭> হে প্রশান্ত / নিরুদ্বেগ বান্দা / স্বত্বা,
৮৯:২৮> তুমি তোমার পালনকর্তার নিকট ফিরে আসো খুশী ও সন্তুষ্ট চিত্তে ।
৮৯:২৯> অতঃপর আমার বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাও।
৮৯:৩০> এবং আমার জান্নাতে প্রবেশ কর।

গল্প নয়, সত্য ঘটনাঃ২:২৫৯
তুমি কি সে লোককে দেখনি যে এমন এক জনপদ দিয়ে যাচ্ছিল যার বাড়ীঘরগুলো ভেঙ্গে ছাদের উপর পড়ে ছিল (ঘূর্ণিঝড়ে যেমনটি উল্টে পাল্টে ধ্বংস হয়, মানুষ-প্রানীকুল ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকে) ? বলল, কেমন করে আল্লাহ মরনের পর একে জীবিত করবেন? অতঃপর আল্লাহ তাকে মৃত অবস্থায় রাখলেন একশ বছরতারপর তাকে উঠালেনবললেন, কত কাল এভাবে ছিলে? বলল আমি ছিলাম, একদিন কংবা একদিনের কিছু কম সময়বললেন, তা নয়; বরং তুমি তো একশ বছর ছিলেএবার চেয়ে দেখ নিজের খাবার ও পানীয়ের দিকে-সেগুলো পচে যায় নি এবং দেখ নিজের গাধাটির দিকে (ওর হাড় গুলো অবশিষ্ট রেখেছি)আর আমি তোমাকে মানুষের জন্য দৃষ্টান্ত বানাতে চেয়েছি (তোমার পরিচিত মানুষ সমাজে যাও দেখবে ১০০ বছরে কত মানুষ মরেছে, কত মানুষ নতুন এসেছে, আরও কত পরিবর্তন)আর (এখন গাধাটির) হাড়গুলোর দিকে চেয়ে দেখ যে, আমি এগুলোকে কেমন করে জুড়ে দেই এবং সেগুলোর উপর মাংসের আবরণ পরিয়ে দেইঅতঃপর যখন তার উপর এ অবস্থা প্রকাশিত হল, তখন বলে উঠল-আমি জানি, নিঃসন্দেহে আল্লাহ সর্ব বিষয়ে ক্ষমতাশীল
গল্প নয়, সত্য ঘটনাঃ২:২৬০
আর স্মরণ কর, যখন ইব্রাহীম বলল, হে আমার পালনকর্তা আমাকে দেখাও, কেমন করে তুমি মৃতকে জীবিত করবেবললেন; তুমি কি বিশ্বাস কর না? বলল, অবশ্যই বিশ্বাস করি, কিন্তু দেখতে এজন্যে চাইছি যাতে অন্তরে প্রশান্তি লাভ করতে পারিবললেন, তাহলে চারটি পাখী ধরে নাওপরে সেগুলোকে নিজের পোষ মানিয়ে নাও (প্রত্যেকটির আলাদা আলাদা নাম দাও), অতঃপর (জবেহ করে, কেটে, খণ্ড বিখন্ড করে) সেগুলোর দেহের একেকটি অংশ বিভিন্ন পাহাড়ের উপর রেখে দাও (ছড়িয়ে ছিটিয়ে দাও)তারপর সেগুলোকে (নাম ধরে)ডাক; (দেখবে) তোমার নিকট দৌড়ে/ উড়ে চলে আসবেআর জেনে রাখো, নিশ্চয়ই আল্লাহ পরাক্রমশালী, অতি জ্ঞান সম্পন্ন

গল্প নয়, সত্য ঘটনাঃ ১৮;৯-২৬
87:16৯। (হে নাবী) তুমি কি ধারণা কযে, গুহা ও রাকিমের অধিবাসীরা আমার নিদর্শনাবলীর মধ্যে বিস্ময়কর ছিল ? ১০। যখন যুবকরা পাহাড়ের গুহায় আশ্রয়গ্রহণ করে তখন দোআ করেঃ হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদেরকে নিজের কাছ থেকে রহমত দান করুন এবং আমাদের জন্যে আমাদের কাজ সঠিকভাবে পূর্ণ করুন১১।তখন আমি কয়েক বছরের জন্যে তাদের গুহায় ঘুমন্ত অবস্থায় রেখে দেই ১২। অতঃপর আমি তাদেরকে পুনরত্থিত করি, একথা জানার জন্যে যে, দুই দলের (গুহা ও রাকিম) মধ্যে কোন দল তাদের অবস্থানকাল সম্পর্কে অধিক নির্ণয় করতে পারে১৩। হে নাবী তোমার নিকট তাদের ইতিবৃত্তান্ত সঠিকভাবে বর্ণনা করছিতারা ছিল কয়েকজন যুবকতারা তাদের পালনকর্তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছিল এবং আমি তাদের সৎপথে চলার শক্তি বাড়িয়ে দিয়েছিলাম১৪। আমি তাদের মন দৃঢ় করেছিলাম, যখন তারা উঠে দাঁড়িয়েছিলঅতঃপর তারা বললঃ আমাদের পালনকর্তা আসমান ও যমীনের পালনকর্তা আমরা কখনও তার পরিবর্তে অন্য কোন উপাস্যকে আহবান করব নাযদি করি, তবে তা অত্যন্ত গর্হিত কাজ হবে১৫। এরা আমাদেরই স্ব-জাতি, এরা তাঁর পরিবর্তে অনেক উপাস্য গ্রহণ করেছেতারা এদের সম্পর্কে প্রকাশ্য প্রমাণ উপস্থিত করে না কেন? যে আল্লাহ সম্পর্কে মিথ্যা উদ্ভাবন করে, তার চাইতে অধিক গোনাহগার আর কে? ১৬। তোমরা যখন তাদের থেকে পৃথক হলে এবং তারা আল্লাহর পরিবর্তে যাদের এবাদত করে তাদের থেকে, তখন তোমরা গুহায় আশ্রয়গ্রহণ করতোমাদের পালনকর্তা তোমাদের জন্যে দয়া বিস্তার করবেন এবং তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের কাজ কর্মকে ফলপ্রসু করার ব্যবস্থা করবেন১৭। তুমি সূর্যকে দেখবে, যখন উদিত হয়, তাদের গুহা থেকে পাশ কেটে ডান দিকে চলে যায় এবং যখন অস্ত যায়, তাদের থেকে পাশ কেটে বামদিকে চলে যায়, অথচ তারা গুহার প্রশস্ত চত্বরে অবস্থিতএটা আল্লাহর নিদর্শনাবলীর অন্যতমআল্লাহ যাকে সৎপথে চালান, সেই সৎপথ প্রাপ্ত এবং তিনি যাকে পথভ্রষ্ট করেন, তুমি  কখনও তার জন্যে পথপ্রদর্শনকারী ও সাহায্যকারী পাবেন না১৮।তুমি মনে করবে তারা জাগ্রত, অথচ তারা নিদ্রিতআমি তাদেরকে পার্শ্ব পরিবর্তন করাই ডান দিকে ও বাম দিকেতাদের কুকুর ছিল সামনের পা দুটি গুহাদ্বারে প্রসারিত করেযদি তুমি উঁকি দিয়ে তাদেরকে দেখতে, তবে পেছন ফিরে পলায়ন করতে এবং তাদের ভয়ে আতংক গ্রস্ত হয়ে পড়তে১৯। আমি এমনি ভাবে তাদেরকে জাগ্রত করলাম, যাতে তারা পরস্পর জিজ্ঞাসাবাদ করেতাদের একজন বললঃ তোমরা কতকাল অবস্থান করেছ? তাদের কেউ বললঃ একদিন অথবা একদিনের কিছু অংশ অবস্থান করছিকেউ কেউ বললঃ তোমাদের পালনকর্তাই ভাল জানেন তোমরা কতকাল অবস্থান করেছএখন তোমাদের একজনকে তোমাদের এই মুদ্রাসহ শহরে প্রেরণ কর; সে যেন দেখে কোন খাদ্য পবিত্রঅতঃপর তা থেকে যেন কিছু খাদ্য নিয়ে আসে তোমাদের জন্য; সে যেন নম্রতা সহকারে যায় ও কিছুতেই যেন তোমাদের খবর কাউকে না জানায় ২০। তারা যদি তোমাদের খবর জানতে পারে, তবে পাথর মেরে তোমাদেরকে হত্যা করবে, অথবা তোমাদেরকে তাদের ধর্মে ফিরিয়ে নেবেতাহলে তোমরা কখনই সাফল্য লাভ করবে না২১। এমনিভাবে আমি তাদের খবর প্রকাশ করে দিলাম, যাতে তারা জ্ঞাত হয় যে, আল্লাহর ওয়াদা সত্য এবং কেয়ামতে কোন সন্দেহ নেইযখন তারা নিজেদের কর্তব্য বিষয়ে পরস্পর বিতর্ক করছিল, তখন তারা বললঃ তাদের উপর সৌধ নির্মাণ করতাদের পালনকর্তা তাদের বিষয়ে ভাল জানেনতাদের কর্তব্য বিষয়ে যাদের মত প্রবল হল, তারা বললঃ আমরা অবশ্যই তাদের স্থানে মসজিদ নির্মান করব ২২। অজ্ঞাত বিষয়ে অনুমানের উপর ভিত্তি করে এখন তারা বলবেঃ তারা ছিল তিন জন; তাদের চতুর্থটি তাদের কুকুরএকথাও বলবে; তারা পাঁচ জনতাদের ছষ্ঠটি ছিল তাদের কুকুরআরও বলবেঃ তারা ছিল সাত জনতাদের অষ্টমটি ছিল তাদের কুকুরবলুনঃ আমার পালনকর্তা তাদের সংখ্যা ভাল জানেনতাদের খবর অল্প লোকই জানেসাধারণ আলোচনা ছাড়া আপনি তাদের সম্পর্কে বিতর্ক করবেন না এবং তাদের অবস্থা সম্পর্কে তাদের কাউকে জিজ্ঞাসাবাদ ও করবেন না২৩। হে নাবী, তুমি কোন কাজের বিষয়ে বলবে না যে, সেটি আমি আগামী কাল করব ২৪। আল্লাহ ইচ্ছা করলে  বলা ব্যতিরেকেযখন ভুলে যা, তখন তোমার পালনকর্তাকে স্মরণ কর এবং বল আশা করি আমার পালনকর্তা আমাকে এর চাইতেও নিকটতম সত্যের পথ নির্দেশ করবেন২৫। তাদের উপর তাদের গুহায় তিনশ বছর, অতিরিক্ত আরও নয় বছর (৩০৯) অতিবাহিত হয়েছে২৬।বল তারা কতকাল অবস্থান করেছে, তা আল্লাহই ভাল জানেননভোমন্ডল ও ভুমন্ডলের অদৃশ্য বিষয়ের জ্ঞান তাঁরই কাছে রয়েছেতিনি কত চমৎকার দেখেন ও শোনেনতিনি ব্যতীত তাদের জন্য কোন সাহায্যকারী নেইতিনি কাউকে নিজ কর্তৃত্বে শরীক করেন না



শেষ কথাঃ
৬৮:৫২> কুরআন বিশ্ববাসীর জন্য স্বরনীয়/বরণীয়/ গ্রহণীয়/পালনীয় গ্রন্থ । ৬৮:৪০> আপনি তাদেরকে জিজ্ঞাসা করুন তাদের কে এ বিষয়ে দায়িত্বশীল / এসব চিন্তার (নাবী সাঃ হায়াতুন্নাবী, কবরে জিন্দা)  প্রতিষ্ঠাতা কে? ( যে বিষয়ে আল্লাহ্‌ আমাদের রাসুল সাঃ এর নিকট কুরআন দ্বারা কিছু জানান নাই) 
এই সংকলনে কুরআন থেকে বুরহান পেশ করা হয়েছে- কুরআন তো রাসুল সাঃ এর জবানীতে উচ্চারিত আল্লাহ্‌র বানী।
## আমরা সবাই (পূর্ববর্তী ও পরবর্তী)  হাশরের মাঠে জমায়েত হব, সে এক বিশাল বর্ণনা যা কোরআনে বর্ণিত আছে স্পষ্ট ভাবে। কোরআনে যে সকল (আয়াত / নিদর্শন) যা উল্লেখিত হয়েছে তা বিস্তারিত বর্ণিত হয়েছে- এজন্যই কুরআন কে বায়ানুল কুরআন বলা হয় । আর রাসুল সাঃ কে যা কিছু শিক্ষাদেয়া হয়েছে তার যা কিছু আমাদের কাছে সঠিক ভাবে পৌঁছেছে, তা মুলতঃ কুরআনের সাথে মিলে যায় ) ।
৭০:১৯> মানুষ দুর্বল মনের করে সৃষ্টি ।
মানুষের মন অস্থির চিত্তের- আবেগ প্রবন। আমরা আল্লাহকে ভালবাসি, রাসুল সাঃ কে মানি, অনুসরণ করি । রাসুল সাঃ কে এমন ভাবে মানি, মহাব্বাত করি, মানি যে তা নিজের পিতা মাতা সন্তান সম্পদ এর চেয়ে বেশী । এই সুযোগে শয়তান যেন আমাদের ঈমানের মজবুত বন্ধনের শর্ত সমুহ অর্থাৎ আকিদা যেন বিনষ্ট করে না দেয় সেদিকে সদা সতর্ক থাকতে হবে ।
রাসুল সাঃ কোন অমুলক কাহিনী বলেননি আল্লাহ্‌র বানী ছাড়া, কুরআন দিয়েই রাসুল সাঃ কথা বলেছেন, রাষ্ট্র চালিয়েছেন, পরিবার সমাজ গঠন করেছেন, আদেশ উপদেশ দিয়েছেন । তাই ঈমানকে মজবুত ভাবে (আকিদা দিয়ে) ধরে রাখতে কুরআনকে কামড়ে আঁকড়ে ধরুন । রাসুল সাঃ এর সঠিক জীবনী জানুন, দেখুন সবই মিলে যাবে আল কুরআনের সাথে । সঠিক ঈমান - আকিদা সম্পন্ন জ্ঞ্যানী আলেম যিনি আল্লাহ্‌র কালাম কে অনুধাবন করতে পারেন, রাসুল সাঃ এর বানীকে / সুন্নাহ কে  কাহিনী থেকে নকল থেকে বাছাই করতে পারেন, পাক্কা ঈমান ওয়ালা , পাক্কা মুস্লিম, ইসলামে পূর্ণ ভাবে দাখিল আছে তার সাথে আলাপ করে কুরআনের আলাকে আলোকিত হয়ে সিরাতুল মুস্তাকিমের পথে চলুন ।  
আল্লাহ্‌ বলেনঃ ৩:১০৩>
আর তোমরা সকলে আল্লাহর রজ্জুকে সুদৃঢ় হস্তে ধারণ কর; পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না। আর তোমরা সে নেয়ামতের কথা স্মরণ কর, যা আল্লাহ তোমাদিগকে দান করেছেন। তোমরা পরস্পর শত্রু ছিলে। অতঃপর আল্লাহ তোমাদের মনে সম্প্রীতি দান করেছেন। ফলে, এখন তোমরা তাঁর অনুগ্রহের কারণে পরস্পর ভাই ভাই হয়েছ। তোমরা এক অগ্নিকুন্ডের পাড়ে অবস্থান করছিলে। অতঃপর তা থেকে তিনি তোমাদেরকে মুক্তি দিয়েছেন। এভাবেই আল্লাহ নিজের নিদর্শনসমুহ প্রকাশ করেন, যাতে তোমরা হেদায়েত প্রাপ্ত হতে পার।

০০০০০০ সমাপ্ত ০০০০০০

Comments

Popular posts from this blog

what is Nafs ? নাফস কি?

রাসুল সাঃ এর শীনা চাক আসলে কি ভাবে হয়েছিল? সুদুরে কি হয়?